খেলার মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে যুবক খুনে ‘বাবা ও তিন ছেলে’
১৪ নভেম্বর ২০২১ ১৬:২৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ফুটবল খেলার সময় মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ও তার তিন ছেলেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব)। রেলওয়ের জায়গায় আধিপত্য বিস্তার, কিশোর গ্যাং পরিচালনাসহ স্থানীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে মূল অভিযুক্ত ব্যক্তি পরিকল্পিতভাবে ওই যুবককে খুন করায় বলে র্যাব জানিয়েছে।
শনিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকার কেরাণীগঞ্জ এবং শরীয়তপুরের নড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।
গ্রেফতার চার জন হলেন— মূল অভিযুক্ত আমির হোসেন (৫০) এবং তিন ছেলে মো. সোহেল (২১), মো. হাসান (১৯) ও মো. সোহাগ (২৩)।
আরও পড়ুন- খেলার মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে যুবককে খুন
র্যাব জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পর আমির ও তার তিন ছেলে চট্টগ্রাম নগরীর কর্ণেলহাট এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে আমির আরও কয়েকজন নিকটজনের বাসায় আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এরপর আমির ও সোহাগ ঢাকার কেরাণীগঞ্জে পালিয়ে যায়। সেখানে আত্মগোপনরত অবস্থা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সোহেল ও হাসানকে শরীয়তপুরের নড়িয়ায় তাদের মামার বাড়িতে আত্মগোপনরত অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে, গত ৮ নভেম্বর নগরীর খুলশী থানার আমবাগান তরুণ সংঘের মাঠে ফুটবল খেলা চলাকালীন মো. হানিফ (২১) নামে এক যুবককে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয়। ছুরিকাঘাতে আহত হন তার বড় ভাই অনীকও। হানিফ নগরীর আমবাগান শহিদ মিনার কলোনির বাসিন্দা মো. আলাউদ্দিনের ছেলে। বাসা নগরীর আমবাগান শহিদ মিনার কলোনিতে। তিনি পেশায় টাইলস শ্রমিক ছিলেন।
রেলওয়ের ঠিকাদার স্থানীয় আমির হোসেনের সঙ্গে বিরোধের জেরে হানিফকে খুন করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব কর্মকর্তা এম এ ইউসুফ। তিনি জানান, আমির হোসেনের বাড়ি শরীয়তপুরে। কিন্তু শৈশব থেকে তিনি চট্টগ্রাম শহরের আমবাগান এলাকায় বসবাস করেন। একসময় ডাকাত গ্রুপের নেতৃত্ব দিতেন, যার কারণে স্থানীয়রা তাকে আমির ডাকাত নামেও চেনেন। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে তিনটি মামলা আছে। তবে বয়সের কারণে ডাকাত গ্রুপের নেতৃত্ব ছেড়ে গত কয়েকবছর ধরে তিনি রেলওয়ের ঠিকাদারি শুরু করেন। তবে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে আমির তার চার ছেলের মধ্যে তিন ছেলেকে দিয়ে একটি কিশোর গ্যাং পরিচালনা করতেন।
হানিফের সঙ্গে বিরোধের বর্ণনা দিয়ে লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ‘হানিফ এবং তার ভাই অনীকের নেতৃত্বেও একটি কিশোর গ্যাং ছিল। রেলের বিভিন্ন স্থাপনায় তাদের আধিপত্য ছিল। এ নিয়ে আমিরের সঙ্গে তাদের বিরোধ ছিল। আমবাগান এলাকায় তরুণ সংঘের মাঠে একটি ফুটবল টুর্নামেন্টে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিলেন আমির। এতে ক্ষুব্ধ হন হানিফ ও তার ভাই। এ নিয়ে বিরোধের জেরে আমির তার তিন ছেলেকে দিয়ে হানিফকে খুনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে খেলার মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে সোহাগ হানিফকে বুকে এবং অনীককে পায়ে ছুরিকাঘাত করে। হানিফ মারা যান।’
হানিফ খুনের ঘটনায় তার ভাই জয়নাল আবেদিন বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে খুলশী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর