কাবুলে তালেবানের সামরিক মহড়া
১৫ নভেম্বর ২০২১ ১২:০০
বিদ্রোহী বাহিনী থেকে তালেবান কীভাবে নিয়মিত বাহিনীতে পরিণত হলো তা দেখাতে রাজধানী কাবুলে এক সামরিক মহড়া আয়োজন করা হয়েছে।
রোববার (১৪ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি সাঁজোয়া যান এবং রাশিয়ার তৈরি হেলিকপ্টার ব্যবহার করে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
আফগানিস্তানে দুই দশক ধরে বিদ্রোহী বাহিনী হিসেবে লড়াই চালিয়ে চলতি বছরের আগস্টে পশ্চিমা-সমর্থিত প্রাক্তন আশরাফ ঘানি সরকার হটিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে তালেবান। নিজেদের বাহিনীকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে সাবেক সরকারি বাহিনীর ফেলে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্র ও সরঞ্জামের বিশাল মজুত ব্যবহার করছে তালেবান।
তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়েতুল্লাহ খাওয়ারাজমি বলেছেন, এই মহড়াটি নতুন প্রশিক্ষণ পাওয়া ২৫০ জন সৈন্যের যোগদান উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এ সময় কাবুলের মহাসড়কগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত এম ১১৭ সাঁজোয়া যান ধীর গতিতে আসা-যাওয়া করেছে। একইসঙ্গে এমআই-১৭ হেলিকপ্টারকে টহল দিতে দেখা গেছে। এ ছাড়া মহড়ায় অনেক সৈন্যের হাতে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত এম-৪ অ্যাসল্ট রাইফেল।
তালেবান বাহিনী বর্তমানে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করছে, তার অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। এই অস্ত্রগুলো তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সাবেক আফগান জাতীয় বাহিনীকে দেওয়া হয়েছিল। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি পালিয়ে যাওয়ার পর ওই বাহিনীও ভেঙে যায়। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এই বিপুল অস্ত্রের ভাণ্ডার তালেবানের হাতে চলে যায়।
তালেবান কর্মকর্তারা বলছেন, আগের আফগান সরকার বাহিনীর পাইলট, কারিগর ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের তালেবানের নতুন বাহিনীর সঙ্গে একীভূত করে নেওয়া হবে। এ ছাড়া তালেবান বিদ্রোহীরা ঐতিহ্যবাহী আফগান পোশাক পরলেও এখন তারা প্রচলিত সামরিক পোশাক পরতে শুরু করেছে।
এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০০২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনীকে দুই হাজার ৮০০ কোটি ডলারের বিভিন্ন ধরনের সামরিক অস্ত্র দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল বন্দুক, বিমান এবং গোয়েন্দা নজরদারি চালানোর জন্য ড্রোন।
এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী আফগানিস্তান ত্যাগ করার আগে ৭০ টিরও বেশি বিমান ধ্বংস করে দেয়। এ ছাড়া এক ডজনেরও বেশি সাঁজোয়া যান বিকল করে দিয়ে যায়। তবে বাকি সমরাস্ত্রগুলো তালেবান বাহিনী দখল করে নেয়।
সারাবাংলা/একেএম