দখল হয়ে যাচ্ছে সরকারি চাকরিজীবীর জমি, প্রাণভয়ে গৃহবন্দি
১৫ নভেম্বর ২০২১ ২০:২৪
মেহেরপুর: মেহেরপুর সদর উপজেলার মল্লিকপাড়া গ্রামে সরকারি চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত এক ব্যক্তির জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জমি দখলের নেতৃত্বে আছেন স্থানীয় রোলেক্স হোসেন। তার সহযোগী হিসেবে আছেন সাইফুল ইসলাম ঘোটন ও আলমগীর হোসেন।
দখলদারদের হাত থেকে জমি উদ্ধার ও আইনি প্রতিকার চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিষয়ক সিনিয়র সচিবের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভুক্তভোগী সাবেক কর্মকর্তা এ এইচ এম আব্দুল মান্নান। পাশাপাশি একই অভিযোগ দেওয়া হয়েছে মেহেরপুরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে।
অভিযোগপত্রে আব্দুল মান্নান উল্লেখ করেছেন, তার এস ৩৭৬ নম্বর খতিয়ানভুক্ত জমি সম্পত্তিতে ৫০২৯ নং দাগের সমুদয় জমি ১ দশমিক ৪৬৯৯ একর স্থানীয় রোলেক্স ও তার সহযোগীরা দখল করে নিয়েছেন। ওই জমিতে ২০১৯ সালের ১২ মে অনুপ্রবেশ করেন রোলেক্স ও তার অনুসারীরা। এর ১০ দিন পর পুলিশ গিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। বিরোধপূর্ণ ওই জমির বিষয়ে আদালত ১৪৫ ধারা মোতাবেক স্থিতাবস্থা জারি করে। পরে ওই বছরের ২২ অক্টোবর পুলিশ শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ফৌজদারি নোটিশ দেয়।
আবদুল মান্নানের অভিযোগ— দখলকারীরা জমিতে প্রবেশ করে তার ফসল ও ফলের গাছ নষ্ট করে দিয়েছে। সেখানে অনুপ্রবেশ করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘তারা অনেক দুর্ধর্ষ লোক। তাদের ভয়ে আমি ঘরের বাইরে বের হতে পারছি না। আমাকে ভয় দেখানো হচ্ছে। আমি গৃহবন্দি হয়ে পড়েছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রোলেক্স হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগকারী আবদুল মান্নান আমার দাদার ভাই। সে সম্পর্কে তিনি আমার দাদা হন। ওই দাদা আব্দুল মান্নানের কাছে আমরা সাড়ে ৪ বিঘা জমি পাই। ওই জমি থেকে মান্নান দাদা আমাদের দেড় বিঘা দিতে চেয়েছিলেন আমরা রাজি হইনি।’
রোলেক্স আরও বলেন, ‘এর আগে র্যাব অফিস, ডিবি অফিস, সার্কেল এসপির অফিস, এসিল্যান্ডের অফিসে আমরা বসেছি। সেখানকার সামাজিক রায় আমাদের অনুকূলে এসেছে। যে জমির কথা বলা হচ্ছে তা ২০-৩০ বছর ধরে আমাদের দখলে রয়েছে।’
আইনি সুরাহার মাধ্যমে ওই জমি তার না হলে তিনি দখল ছেড়ে দেবেন বলে জানান রোলেক্স হোসেন।
আব্দুল মান্নাকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার দাদা বেঁচে নেই। তিনি এখন আমাদের দাদা ও অভিভাবক। তাকে ভয়ভীতি দেখাবে কেন? কবে কোথায় তাকে ভয়ভীতি দেখিয়েছি তা বলুক, প্রয়োজন হলে কল লিস্ট দেখা হোক। দাদা শুধু আমার সামনে এসে হুমকির কথাগুলো বলুক।’
এ বিষয়ে মেহেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহ দারা খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘যে জমি নিয়ে বিরোধ, সেটি ওয়ারিশ সংক্রান্ত। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি উভয়পক্ষকে ডেকেছি। বলা হয়েছে কেউ ওখানে ইট-বালু পাথর রাখবেন না। এরপরও যদি ব্যত্যয় ঘটে তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/একে