Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাউবোর অবেহেলায় পাগলা নদীতে বিলীন ৩০টি বাড়ি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৫ নভেম্বর ২০২১ ২১:১৮

পাগলা নদীতে হঠাৎ ধসে পড়েছে বসতবাড়ি, ছবি: সারাবাংলা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় পাগলা নদীতে হঠাৎ ধসে পড়েছে প্রায় ৩০টি বসতবাড়ি। এছাড়াও বেশকিছু বাড়ির মাঝামাঝি স্থানে দেখা দিয়েছে বিশাল ফাটল। ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বেশ কিছু পাকা বাড়ি। এতে আকাশ ভেঙে পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর মাথায়। এমনকি ধসের ভয়ে রাতে ঠিক মতো ঘুমাতেও পারছেন না ওই গ্রামের মানুষ। এজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অবহেলাকে দায়ী করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান।

বিজ্ঞাপন

ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাটি থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। গত মঙ্গলবার উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের জোহরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে রুপচাঁন হালদার, তপন হালদার, ডাবলু, দয়াল হালদার, নজরুল, জাহাদুর ও রশিদসহ বেশ কিছু বসতবাড়িতে এসব ফটল দেখা দিয়েছে।

সোমবার (১৫ নভেম্বর) স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৩০ বছর আগে থেকেই একটু একটু করে গড়ে উঠেছে এই গ্রাম। কিন্তু হঠাৎ গত মঙ্গলবার থেকে প্রায় ৩০ বাড়িগুলোতে ফাটল দেখা দিয়েছে। বেশকিছু পাকা ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। কিছু কিছু ঘর ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বাড়ির মালিকরা বলছেন, সারা জীবনের জমানো টাকা খরচ করে এ ছাদের বাড়ি বানিয়েছিলেন। পরিবার নিয়ে সুখেই কাটছিল তাদের সাজানো সংসার। কিন্তু হঠাৎ করে তাদের সে স্বপ্ন চূর্ণবিচুর্ণ হয়ে যাচ্ছে, দেখার কেউ নেই।

রূপচাঁন হালদার জানান, গত বুধবার সকালে বাড়ির উঠানে একটি ফাটলের দৃশ্য দেখতে পায়। কিন্তু গুরুত্ব দেয়নি। হঠাৎ মঙ্গলবার সকালে দেখি আমার একটি ছাদের ঘরসহ টয়লেট ভেঙে নদীতে পড়ে গেছে। আমি একজন জেলে সারাজীবনের জমানো টাকায় এই বাড়ি বানিয়েছিলাম। এখন আমি কই থাকব। এ ঘর ভাঙাতে বুক ফেঁটে যাচ্ছে। কই থাকব কি খাব, আমি দিশেহারা হয়ে গেছি।

অপর ভু্ক্তভোগী তপন হালদার জানান, আমাদের বাড়ির পিছনেই পাগালা নদী আর পাশেই রয়েছে কানসাট স্লুইস গেট। কিন্তু এতো দিন স্লুইস গেটটি বন্ধ ছিল হঠাৎ গেটটি খুলে দেওয়ায় দ্রুত পানি বাইরে চলে যায় তার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের ঘরবাড়ি ধসে যেতে থাকে।

অলকা, সুন্দরিসহ বেশ কয়েকজন জানান, আমরা গরিব মানুষ কারও স্বামী মাছ ধরে, কারও স্বামী বাদাম বিক্রি করে। কেউবা ঋণ নিয়ে আবার কেউ সারাজীবনের জামানো টাকায় ছোট করে গড়ে তুলেছিলেন স্বপ্নের বাড়ি। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে গেল। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেল স্বপ্নের ঘর। এখন তারা পাশের একটি মন্দিরে রাত কাটাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

মোবারকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলার কারণে ৩০টি পরিবার আজ পথে বসতে যাচ্ছে। স্লুইস গেট খোলার আগে অবশ্যই আশপাশের বাসিন্দাদের কথা ভাবা উচিত ছিল।’

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার জাহান সুজনকে একাধিকবার কল দিলেও তা রিসিভ হয়নি।

সারাবাংলা/এনএস

নদীতে বিলীন ৩০টি বাড়ি পাগলা নদী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ইনজুরিতে মৌসুম শেষ রদ্রির
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:২৮

সম্পর্কিত খবর