Saturday 19 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গাছে গাছে রসের হাড়ি, নিচেই তৈরি হচ্ছে গুড়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৬ নভেম্বর ২০২১ ০৯:০০ | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২১ ০৯:০১
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঠাকুরগাঁও: শীতের সকালের অন্যতম অনুষঙ্গ খেজুর রস। আর ছবিটা যদি এমন হয়, খেজুর গাছে ঝুলছে মাটির হাড়ি; তাহলে আর কারো বুঝতে বাকি থাকে না শীত এসে গেছে। তবে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের বোচাপুকুর গ্রামে দেখা মিলছে আরও বেশি। গাছে গাছে ঝুলছে রসের হাড়ি, আর গাছের নিচেই তৈরি হচ্ছে গুড়।

ভোরের সূর্য ওঠার আগেই গাছিরা রসভর্তি মাটির হাড়ি নামিয়ে টিনের বড় তাওয়া বা টাবালিতে জ্বাল দিয়ে পাঠালি গুড় তৈরি করছেন। গুড় তৈরির এই দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন জেলাসহ অন্য জেলা থেকে আসা শত শত ক্রেতা ও দর্শণার্থীরা ভিড় জমাচ্ছেন সুগার মিলের মোহন ইক্ষু খামার খেজুর বাগানে। প্রতিদিন ৬০০ খেজুর গাছের মধ্যে ৪০০ গাছ থেকে প্রায় ৫০০ লিটার রস সংগ্রহ করা হয় এবং ৯০ থেকে ১০০ কেজি গুড় উৎপাদন করা হয়। কিন্তু বাজারে পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় সরবরাহ করতে পারছে না বলে জানালেন দূরদূরান্ত থেকে আসা ক্রেতা ও দর্শণার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

পঞ্চগড় থেকে আসা সফিকুল ইসলাম বলেন, সকাল আটটায় এসেও রস ও গুড় কিনতে পারেননি। আসার আগেই সব শেষ হয়ে গেছে। একই কথা বলেন রবিউল ইসলামসহ অনেকে।

নারগুন বোচাপুকুর গ্রামের রুস্তম আলী বলেন, প্রতিদিন আশপাশের জেলা থেকে অনেকেই খেজুর গুড় কিনতে আসেন। এই গুড় খেতে সুস্বাদু ও সুগন্ধি যুক্ত এবং ভেজাল মুক্ত। এই গুড় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও সরবরাহ করা হচ্ছে এবং প্রতি কেজি গুড় বিক্রি করা হচ্ছে কেজি প্রতি ১৭০-১৮০ টাকা দরে।

 

অন্যদিকে শীতকে উপেক্ষা করে পরিবারের শিশু ও বড়দের সঙ্গে নিয়ে স্বপরিবারে প্রাকৃতিকভাবে খেজুরের গুড় তৈরির দৃশ্য দেখতে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মাইক্রো ও মোটরসাইকেল যোগে শত শত মানুষ ছুটে আসছেন এখানে।

এমনি কয়েকজন দর্শণার্থী জানান, এখানকার পরিবেশ অনেক সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর। এখানে প্রাকৃতিকভাবে গুড় তৈরির দৃশ্য উপভোগ করছেন এবং রস ও গুড় ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন।

রাজশাহী থেকে আসা গাছি সুজন আলী বলেন, চাহিদা অনেক বেশি থাকায় সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেকে গুড় নিতে আগে থেকেই সিরিয়াল দিয়ে থাকেন। গুড় তৈরিতে প্রতিদিন ১৫-২০ জন শ্রমিক কাজ করেন। প্রায় ৪ মাস গুড় সংগ্রহের কাজ চলে। এতে শ্রমিকরাও লাভবান হন এবং আমরাও লাভবান হই, অপরদিকে বাগান মালিকরাও লাভবান হয়।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ রায় বলেন, খেজুর গুড় আখের গুড়ের তুলনায় অনেক বেশী পুষ্টি সমৃদ্ধ। সেজন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এই গুড় খেতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এবং উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

সারাবাংলা/এএম

গুড় রসের হাড়ি