প্রিয় ক্যাম্পাসে চিরনিদ্রায় শায়িত হাসান আজিজুল হক
১৬ নভেম্বর ২০২১ ১৫:৩৮
রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় ক্যাম্পাসে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক প্রয়াত হাসান আজিজুল হক। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) বাদ জোহর জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
তার জানাজায় অংশ নেন রাবির উপাচার্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, রাজনীতিবিদ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
এর আগে হাসান আজিজুল হকের মরদেহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দুপুর ১২টার দিকে রাবির শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে রাখা হয়। এর আগে মরদেহ নেওয়া হয় তার প্রিয় দর্শন বিভাগে, যেখানে দীর্ঘদিন তিনি শিক্ষকতা করেছেন।
শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে হাসান আজিজুল হকের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর প্রশাসন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের মানুষ তার মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করেন।
এরও আগে সকালে গোসলের কাজ সম্পন্নের পর কাফনে জড়ানো কফিন রাখা হয় তার বাসার সামনে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাড়াও কবি-সাহিত্যিকেরা তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। তারা হাসান আজিজুল হকের জীবনের নানা দিক নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।
সোমবার রাত সোয়া নয়টার দিকে রাজশাহী নগরীর চৌদ্দপাই এলাকার নিজ বাসভবন উজানে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র হাসান আজিজুল হক।
হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালে ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের বর্ধমান জেলার জব গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬০ সালে দর্শনে এম. এ. ডিগ্রি লাভ এবং ১৯৭৩ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৪ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল এই নক্ষত্র দর্শন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছে ছিলেন অত্যন্ত আপনজন।
কথাসাহিত্যে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার, পদক ও সম্মাননা। এর মধ্যে রয়েছে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৭), বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭০), অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১), আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৩), অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৪), ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮), কাজী মাহবুব উল্লাহ ও বেগম জেবুন্নিসা পুরস্কার। এছাড়া ১৯৯৯ সালে ‘একুশে পদকে’ ভূষিত হন হাসান আজিজুল হক। ‘আগুনপাখি’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার। ২০১২ সালে তিনি ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডিলিট ডিগ্রি পান। ২০১৯ সালে তিনি স্বাধীনতা পদক পান।
সারাবাংলা/এএম