সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদে ৩ দিন কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি
১৬ নভেম্বর ২০২১ ১৭:২২
ঢাকা: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ও সিলেটের কানাইঘাট সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে চার বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার প্রতিবাদে তিন দিন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিবরণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, সম্প্রতি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ ও সিলেটের কানাইঘাট সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে চার বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয় সভায়। সভা মনে করে, সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণেই সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটছে।
তিনি জানান, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটর সভায় বলা হয়— সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ করার জন্য গুলি করে মানুষ হত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
মির্জা ফখরুল আলমগীর জানান, সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে আগামী ১৮ নভেম্বর লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জে, ১৯ নভেম্বর সিলেট জেলা কানাইঘাটে এবং ২০ নভেম্বর ঢাকা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
তিনি জানান, সম্প্রতি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ব্যপক সহিংসতা, প্রাণহানি, কারচুপি, জালিয়াতির ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানানো হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায়। দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তকে দেশের গণতন্ত্রের জন্য এবং তৃণমূল পর্যায়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার প্রশ্নে চরম হুমকি স্বরূপ বলে অভিহিত করা হয় সভায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আইন করার সময় তীব্র আপত্তি জানিয়েছিল বিএনপি এবং এই আইন সামাজিক বিভাজন ও সহিংসতা বৃদ্ধি করবে বলে মতপ্রকাশ করা হয়েছিল বিএনপির পক্ষ থেকে।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘এই নির্বাচনে চলমান সহিংসতার ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে বিএনপি’র বক্তব্যের সত্যতা প্রতিষ্ঠিত হলো। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচন কমিশন চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে। এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সরকারী দলের নগ্ন হস্তক্ষেপ, প্রশাসনের পক্ষপাতিত্ব নির্বাচন কমিশনের চরম ব্যর্থতা নির্বাচন ব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে।’
তিনি জানান, অবিলম্বে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যোগ্য নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে।
এছাড়া জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের জ্বালানি সচিবের মন্তব্যে সভায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়, মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং সরকারের ভ্রান্তনীতির কারণে দেশের জনগণ ভোগান্তির মধ্যে পড়ছে। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে গোটা অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। বিশেষ করে কৃষি খাতে সেচের খরচ বেড়ে যাওয়ায় খাদ্যশস্য ও কৃষিপণ্যের উৎপাদন ব্যয় অনেক বাড়বে, যা সামগ্রিক উৎপাদনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মত দেয় বিএনপির স্থায়ী কমিটি— জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সারাবাংলা/এজেড/টিআর