Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৪ বছর জেল হতে পারে মিলার

আরিফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৭ নভেম্বর ২০২১ ১০:২৮

ঢাকা: সংগীতশিল্পী তাশবিহা বিনতে শহীদ মিলার (৩৩) বিরুদ্ধে সাবেক স্বামী পারভেজ সানজারিকে এসিড নিক্ষেপের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়েছে।

মিলা এবং তার সহযোগী কিম জন পিটার হালদারের বিরুদ্ধে ১৪ নভেম্বর ঢাকার এসিড দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূইয়া এসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ সালের ৫ (খ) ও ৭ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন। এই ধারাগুলোয় দোষী প্রমাণিত হলে সর্বনিম্ন সাত বছর থেকে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে দাবি করেছেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষ সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ার উল্লাহ জানান, ‘মামলাটি অনেক সেনসিটিভ। আসামি একজন সংগীত শিল্পী। তারপরও সে আসামি। অপরাধ যেই করুক না কেনো আইনের আওতায় তাকে আসতেই হবে। আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন হয়ে গেছে। এখন রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাক্ষীদের আদালতে হাজির করে মামলাটির বিচার যেন দ্রুত শেষ হয় এবং আসামিদের যেন সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত হয় সে লক্ষ্যে কাজ করে যাব।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে তাদের সর্বোচ্চ সাজা ১৪ বছর হতে পারে। সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করতে তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন। মামলাটি এসিড নিক্ষেপের। আশা করছি তার (মিলার) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হবে।

অন্যদিকে মিলার আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়ে গেছে। মামলাটি আইনগতভাবে মোকাবিলা করা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, মিলা ‘খালাস পাবেন’।

এসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ সালের ৫ (খ) ধারায় বলা হচ্ছে, যদি কোনো ব্যক্তি এসিড দিয়ে অন্য কোনো ব্যক্তিকে এমনভাবে আহত করেন, যার ফলে তার শরীরের কোনো অঙ্গ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হয় বা শরীরের কোনো স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তাহলে তাকে অনাধিক চৌদ্দ বছরের কিন্তু নিম্ন ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর, একই আইনের ৭ ধারায় অপরাধীর সহযোগীতার সাজার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১২ মে সংগীতশিল্পী তাশবিহা বিনতে শহীদ মিলা (৩৩) ও এসএম স্বামী পারভেজ সানজারির সাথে বিবাহ হয়। পরের বছর ৩১ জানুয়ারি আসামি ও ভিকটিমের মধ্যে সাংসারিক বনিবনা না হওয়ায় ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর থেকে পারভেজ সানজারির বিরুদ্ধে মিথ্যা, কুৎসা রটনা করে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টাসহ বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল মিলা তার ফেসবুক আইডি থেকে সানজারির বিরুদ্ধে মিথ্যা কুরুচিপূর্ন ও সম্মানহানীকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের অভিযোগ এনে আদালতে একটি পিটিশন মামলা করেন। এরপর থেকেই সে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। একই বছরের ২ জুন সন্ধ্যায় সানজারি বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হলে রাস্তার মধ্যে পিস জন পিটার হালদার ওরফে কিম (২৮) পথরোধ করে সাহায্য চায়। তখন মিলাকে রাস্তার পাশে আড়ালে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন সানজারি।

সানজারি বিষয়টি বুঝতে পারলে স্থানত্যাগ করার চেষ্টা করেন মিলা। ওই সময় কিম তার কাঁধের ব্যাগ থেকে বোতল বের করে তরল দাহ্য পদার্থ সানজারিকে লক্ষ্য করে ছুঁড়ে মারে। তখন তার শরীরের বিভিন্ন অংশসহ দুই হাতের কবজির উপর থেকে দুই পা, পেট ও পুরুষাঙ্গের অংশ বিশেষ পুড়ে গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলে সানজারি তাৎক্ষনিকভাবে চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসতে থাকে তখন আসামিরা পালিয়ে যায়।

ওই ঘটনায় পারভেজ সানজারির বাবা এস এম নাসির উদ্দিন উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর সহকারী পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মিলা এবং পিটারকে অভিযুক্ত উল্লেখ করে চার্জশিট দাখিল করেন।

সারাবাংলা/এআই/একেএম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর