Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইলেকশন করার সাংগঠনিক শক্তি-জনসমর্থন বিএনপির নেই: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৭ নভেম্বর ২০২১ ২৩:১৬

ঢাকা: বিএনপির নির্বাচন বর্জনের সংস্কৃতির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইলেকশন করতে গেলে যে সাংগঠনিক শক্তি বা জনসমর্থন দরকার হয়, সেটা যখন নেই তখন তারা ওই আমরা করব না, মানি না বলে নিজেদের দৈন্যতাটাই প্রকাশ করে। এখন ইউপি ইলেকশনে বলে দিল তারা তাদের প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করবে না। কিন্তু কেউ এমনি করতে চাইলে করতে পারে। কারণ তারা জানে আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত এমনভাবে উন্নয়নটা করেছে আর সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগকেই ভোট দেয়, আওয়ামী লীগকেই চায়।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে গণভবনে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সফর পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের শাপলা হলে সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। শুরুতে লিখিত বক্তব্য শেষে পরে সাংবাদিকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দুই পাশে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা কি কিছুই টের পান না। আজকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। যারা এর আগে ক্ষমতায় ছিল, জিয়াউর রহমানের কথা বলি বা এরশাদ বা খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার আমলে বাংলাদেশ পাঁচ পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।’

আজকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি, বিএনপি মিলিটারি ডিটেকটররা অবৈধভাবে সংবিধান লঙঘন করে ক্ষমতা দখল করে তারপরে তারা ক্ষমতায় গিয়ে দলগুলো সৃষ্টি করেছে। কাজেই এরা হলো ক্ষমতার ছত্রছায়ায় তৈরি করা দল। ক্ষমতার বাইরে টিকে থাকার জোর নেই। কারণ এদের শিকড়ের জোর নেই বলেও দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আজকে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের একটা সম্মান। একটা মর্যাদা এটা তাদের কাছে কখনো ভাল লাগবে না। যে কারণে তাদের ষড়যন্ত্র সবসময় হচ্ছে। আপনারা যদি চোখে না দেখেন তাহলে আমার কিছু বলার নেই। আপনারা তো এইটুকু বোঝেন, চলন্ত বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো নাকি সেটাও ভুলে গেছেন? ২০০১ সালে কীভাবে মেয়েদের ধর্ষণ করা হয়েছে, কীভাবে ঘরবাড়ি দখল করা হয়েছে? সেটা কী দেখেছেন?’

সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র তারা প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এদেশে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি কে করেছে? বাংলা ভাই কখন হয়েছে? বাংলা ভাই মিছিল করে পুলিশ পাহারা দেয়। এগুলো তো বিএনপির আমলে। আমরা আসার পর এগুলোকে দমন করেছি, নিয়ন্ত্রণ করেছি। আমরা বিভিন্ন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে দেশে একটা শান্তিপূর্ণ অবস্থা উন্নয়ন যাতে হয় সেটিই করে যাচ্ছি। এখন তারা ইলেকশন করে না? এরা ইলেকশন নিয়ে প্রশ্ন তোলে কীভাবে? জিয়াউর রহমান কী ইলেকশন করেছিল? ১৯৭৭ সালে তার হ্যাঁ-না ভোট, ১৯৭৮ সালে তার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন- সেটা কী কোনো নির্বাচন ছিল?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে কি করে চলে? এখনও তাদের ইচ্ছা, তারা ২০১৪’ এ ইলেকশন করবে না। ইলেকশন করবে কীভাবে বা ইলেকশন করতে গেলে যে সাংগঠনিক শক্তি বা জনসমর্থন দরকার হয়, সেটি যখন নেই তখন তারা ওই আমরা করব না, মানি না বলে নিজেদের দৈন্যতাটাই প্রকাশ করে। এখন ইউপি ইলেকশনে বলে দিল তারা তাদের প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করবে না। কিন্তু কেউ এমনি করতে চাইলে করতে পারে? কেন তারা জানে যে, আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত এমনভাবে উন্নয়নটা করেছে। আর সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগকেই ভোট দেয়, আওয়ামী লীগকেই চায়।’

‘এখন কীভাবে ক্ষমতা থেকে সরাবে। গ্রেনেড হামলা করে পারল না। সেই ৭৪কেজি বোমা ফিট করার পরও বেঁচে গেলাম। সরাসরি গুলি করল কত দফা। এতো দফা এখন বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে। বারবার তো আমি ভুক্তভোগী। তাতেও পারল না। এতবার চেষ্টা করল সফল হতে পারল না। তাদের তো এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবেই। সেটাই তারা করে যাচ্ছে। সেটিই তারা করবে। এটাই তাদের চরিত্র।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা ক্ষমতায় আসছে অস্ত্রের মাধ্যমে। ক্ষমতায় আসছে বন্দুকের জোরে এবং তাদের সৃষ্টি ওখান থেকে। ওই বন্দুকের নল থেকেই সৃষ্টি। অবৈধ ক্ষমতা থেকেই সৃষ্টি। তো এখন লন্ডনে বসে রিফিউজিডি হয়ে একদিকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা, আমার আমাদের তো কিছু লোক থাকেই। পয়সা পেয়ে ভাড়া খেটে যত পারে বাংলাদেশের বিুরদ্ধে অপপ্রচার চালাতেই থাকে। কারণ এখানে পয়সা, মানি ম্যাটারস, ওতো মোটা অংক পেলে। কারণ এরা তো টাকা পয়সা সব, যেভাবে পারুক বাংলাদেশের সব অর্থ তো চুরি করে নিয়ে বিদেশে আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছে। সামান্য কিছু টাকা আমরা উদ্ধার করে এনেছি। সেটা খালেদা জিয়ার এক ছেলের টাকা। আর বাকিগুলো তো আছেই এবং তারা সেগুলো ওখানে ভালভাবে ব্যবহার করছে এবং ব্যবহারটা বাংলাদেশের মধ্যে কিভাবে গোলমালটা পাকাবে। আজকে এখানে বোমা হামলা, কালকে ওখানে মন্দির ভাঙ্গা। কালকে সেখানে মন্দিরে কোরআন শরিফ রাখা, সবকিছু তো কারা নিয়ন্ত্রণ করে, কোথা থেকে আসে ? এটা তো তদন্তে বের হচ্ছে এবং আরও তথ্য বের হবে।’

এখন তো ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়াতে একটা সুবিধা আছে, সিসিটিভি বের করা হয়েছে এবং আরও তথ্য বের হবে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর সাংবাদিকরাই যদি প্রশ্ন করেন ষড়যন্ত্র করেন তাহলে যাব কোথায়? আপনাদেরও বের করা উচিত? আপনারা কি চান? আপনারা কি চান ইলেকশন না হোক, এদেশের ইলেকশন প্রশ্নবিদ্ধ থাক এদেশের এই উন্নয়নগুলির কাজ থমকে যাক? থমকে যে যায় সেটা তো দেখেছেন? ১৯৯৬ থেকে ২০০১ যা করেছিলাম সব থেমে গিয়েছিল।’

দেশকে এগিয়ে নিতে দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এই স্বাধীন দেশ, আজকে সারাবিশ্বে সম্মান এটাই তো তাদের মনোকষ্ট। ষড়যন্ত্র তারা করছে। এখন আপনারা না দেখলে আমার কিছু বলার নেই। আমার চোখে যা দেখি আমি সেটা বলি। ..কেউ থাকে চোখ থাকিতে অন্ধ, কান থাকিতে বধির; আমার কিছু বলার নেই।’

সারাবাংলা/এনআর/একে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর