Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লাল শাপলায় মনোলোভা ত্রিশালের চেচুয়া বিল

মোকছেদুল মুমীন, জাককানইবি করেসপন্ডেন্ট
২০ নভেম্বর ২০২১ ০৮:১৬

ত্রিশাল: ফুটেছে লাল শাপলা, চারিদিকে পাখির কলরব। বিলের এপাশ থেকে ওপাশ শুধু চোখ জোড়ানো লাল শাপলার সমারোহ। এ যেন রক্তিম নান্দনিকতার মনোলোভা রূপ। সকালে উদিত সূর্যের আভায় ফুটন্ত লাল শাপলা ও পড়ন্ত বিকালে সূর্যাস্তের মুহূর্তে যে কারও মন কাড়ে। এমন সৌন্দর্য বিরাজ করছে ত্রিশালের চেচুয়া বিলে।

প্রায় ২০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তীর্ণ বিলটি। মাঝে মাঝে সাদা ও বেগুনি শাপলার দেখাও মেলে। এর সঙ্গে ভাসমান কচু ফুলের সাদা আভা এখানকার সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। ভ্রমণপিপাসু মানুষ এই বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে ভিড় জমাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

প্রাকৃতিকভঅবেই বিলে জন্মেছে লাল শাপলাগুলো। গোটা বিলের বুক জুড়ে এখন লাল শাপলার অপরূপ দৃশ্য। শিশির ভেজা রোদ মাখা সকালের জলাশয়ে চোখ পড়লে রঙ-বেরঙয়ের শাপলার বাহারি রূপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।

ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিলের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বিশাল বিল এটি। যদিও সারা দেশের মানুষ অবশ্য এ বিলকে প্রথমে চিনেছে ‘একটি গুজব’কে কেন্দ্র করে। একদিন রাত পেরিয়ে সকাল হতেই কিছু লোক দেখতে পায় সেখানে থাকা জমাটবাঁধা কচু হঠাৎ সরে গিয়ে অনেকটা জায়গা ফাঁকা হয়েছে। এটাকে অলৌকিক ভেবে কয়েকজন এখানে গোসল করে ও এর পানি খেয়ে রোগ থেকে মুক্ত হয়েছে বলে জানান।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সারা দেশের হাজার হাজার মানুষ পানিতে গোসল, কাঁদাযুক্ত পানি সংগ্রহে এখানে ভিড় করে। এমন গুজবও ছড়ানো হয়েছিল যে, হাজারো সমস্যার একমাত্র সমাধান এই চেচুয়া বিল। বিলের পানিতে এক ডুব দিলেই সেরে যাবে যেকোনো রোগ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটিতে ছড়ানো সেই গুজবে হাজারো মানুষের তথাকথিত তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছিল ময়মনসিংহের এই চেচুয়া বিল। বিষয়টি গুজব প্রমাণিত হলেও সারাদেশের মানুষের কাছেই পরিচিত হয়ে ওঠে বিলটি।

বিজ্ঞাপন

দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে আসা যায় চেচুয়া বিলে। বাস কিংবা নিজস্ব গাড়ি নিয়েও আসতে যায় এই বিলে। প্রথমে ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড থেকে বালিপাড়া রোডে অটোভ্যানে করে ঠাকুর বাড়ি মোড়ে এসে নামতে হবে। ভাড়া পড়বে ১০ টাকা। এরপর চেচুয়া বিল পর্যন্ত ভ্যান দিয়ে বা পায়ে হেঁটেও যাওয়া যায়।

চেচুয়া বিল ভ্রমণ করা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী হুমায়রা আক্তার লাকি বলেন, ‘প্রকৃতিতে নিজের রূপ বৈচিত্র অকাতরে বিলিয়ে দিচ্ছে জলাভূমি ও বিলে ফুটে থাকা এ জলজ ফুলের রাণী। শাপলা ফুলের উপস্থিতিতে যেন প্রাণ ফিরেছে গ্রামের শিশুদের উচ্ছ্বল মাখা শৈশব। জলের ওপর বিছানো সবুজ পাতা ভেদ করে হাসছে লাল একেকটি শাপলা। দেখলে মনে হয় শাপলা যেন লাল রঙের গালিচা বিছিয়ে দিয়েছে পুরো বিল জুড়ে।’

এরইমধ্যে, সৌন্দর্য রক্ষায় স্থানীয়ভাবে এই বিলের ফুল তোলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ঘুরতে আসা মানুষকে এলাকাবাসীও সহযোগিতা করছে। দর্শনার্থীদের আনাগোণা আর বিলের অপার সৌন্দর্যে বিলটি পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠবে, আশা স্থানীয়দের।

সারাবাংলা/এমও

চেচুয়া বিল ত্রিশাল লাল শাপলা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর