এমটিবিএফ সিলিং বাড়াচ্ছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়
২১ নভেম্বর ২০২১ ০৮:১৯
ঢাকা: মধ্য মেয়াদী বাজেট কাঠামো (এমটিবিএফ) সিলিং বাড়াতে চায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। নতুন প্রকল্পে গ্রহণের প্রয়োজীয়তা দেখা দেওয়ায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
‘গণমাধ্যমের সঙ্গে সমন্বয় ও উন্নত সেবা প্রদান’ শীর্ষক প্রকল্পের আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রোগ্রামিং কমিটির বিশেষ সভায় এ সব তথ্য জানানো হয়। প্রকল্পটি চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্তর্ভুক্তির জন্য গত ৩১ অক্টোবর এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে এতে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের সদস্য প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী। সভার কার্যবিবরণী সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পটির গুরুত্ব অনুধাবন করে এডিপিতে যুক্ত করার সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। এমটিবিএফ সিলিং হচ্ছে অর্থ বছরের একটি নিদিষ্ট বরাদ্দের সীমা। এর মধ্যেই প্রকল্প নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। এক্ষেত্রে এমটিবিএফ সিলিং বাড়ানো হলে কোনো সমস্যা হবে না বলে সংশ্লিষ্টরা সভায় জানিয়েছেন।’
সভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে- কার্যক্রম বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কৃষি, শিল্প ও সমন্বয়) বলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৮ কোটি ১৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। এমটিবিএফ সিলিং অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ১৯৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকার বরাদ্দ রয়েছে।’
পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট সেক্টর বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এরমধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ২টি নতুন প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে এবং প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) আরও দুটি প্রকল্পের সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের চলমান, নতুন অনুমোদিত এবং পিইসি সুপারিশকরা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য মোট ১ হাজার ৩৪ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন হবে। বর্তমান এই মন্ত্রণালয়ের ফিসকেল স্পেস ঋণাত্মক অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে এমটিবিএফ এ প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের চলমান, নতুন অনুমোদিত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আরও ৮৩৬ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন।’
এ পরিস্থিতিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কীভাবে প্রস্তাবিত প্রকল্পে অর্থায়ন করবে তার ব্যাখ্যা দেওয়া দরকার। এ ছাড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষা হয়েছে কিনা এবং প্রকল্পটি এখনই এডিপির সবুজ পাতায় অন্তর্ভুক্ত না করে ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে (আরএডিপি) অন্তভুক্ত করা যায় কিনা তা সভাকে অবহিত করার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বাজেটের ফিসকেল স্পেস ঋণ বিবেচনায় নিয়ে এমটিবিএফের সিলিং বৃদ্ধির জন্য এরইমধ্যে অর্থ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে এবং এমটিবিএফের সিলিং বৃদ্ধি পাবে তাই তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তথ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রকল্পটি নেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন এবং প্রকল্পের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তভুক্ত রয়েছে এবং এ বিবেচনায় প্রকল্পটি জরুরি ভিত্তিতে নেওয়া প্রয়োজন।’
পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (স্কাইসোয়াম অনুবিভাগ) বলেন, ‘বর্তমান সময়ে গণমাধ্যমে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুজব প্রচারের কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই এই গুজব শনাক্তকরণ এবং নিরসনের জন্য তথ্য অধিদফতরের জন্য তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। যদিও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ফিসক্যাল স্পেস ঋণাত্মক, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ ডিজিটাল পদ্ধতিতে সুচারুরূপে সংরক্ষণের জন্য বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্পটি ২০২১-২২ অর্থবছরের এডিপির সুবুজ পাতায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।’
সভার সভাপতি কার্যক্রম বিভাগের সদস্য (সচিব) প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং সেক্টর বিভাগের প্রতিনিধির বক্তব্যে মনে হয় প্রকল্পটি জনগুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রকল্প নেওয়া ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের এমটিবিএফ সিলিং এবং সরকারের সামর্থে্যর ওপর আরোপ করা প্রয়োজন।’
সারাবাংলা/জেজে/একে