Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশে খেলাপি ঋণ ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ নভেম্বর ২০২১ ১১:৩০

ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলেও ব্যাংকের ঋণমান পরিবর্তন করা যাবে না— এমন নিষেধাজ্ঞার পরেও খেলাপি ঋণ বেড়েছে। গত ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ১২ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত ৩০শে সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে শ্রেণির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। যা বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ১২ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। সর্বশেষ ৯ মাসে অর্থ্যাৎ চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা। গতকাল মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। উল্লেখ্য প্রতি তিন মাস পর পর এই তথ্য প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। ওই অঙ্ক ছিল মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ। কিন্তু গত ৩১ মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দেশে খেলাপি ঋণ বাড়ে ৫ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা। গত জুন মাস শেষে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে হয় ৯৮ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। ফলে বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বাড়ে ৩ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। সর্বশেষ সেপ্টেম্বর মাস শেষে দেশে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। ফলে সর্বশেষ তিন মাসে দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা।

সূত্র আরও জানায়, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। এতে করে সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়। এই সংকট মোকাবেলায় ঋণ খেলাপিদের বেশ কিছু সুবিধা দেয় সরকার। এসব সুবিধার মধ্যে ছিল ২০২০ সালের বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি না দিলেও খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে না। এ ব্যাপারে ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়। সার্কুলারে বলা হয়, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের কোনো কিস্তি পরিশোধ না করলেও ঋণ গ্রহীতা খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন না। এ সময়ের মধ্যে ঋণ বা বিনিয়োগের ওপর কোনোরকম দণ্ড, সুদ বা অতিরিক্ত ফি (যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন) আরোপ করা যাবে না। এসব কারণে গত বছরের ডিসেম্বর শেষে দেশে খেলাপি ঋণ বাড়েনি। কিন্তু চলতি বছরেও বেশ কিছু সুবিধা অব্যাহত রয়েছে। তারাপরেও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর সারাবাংলাকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণের যে তথ্য দিচ্ছে, আসল অঙ্ক তার চেয়ে অনেক বেশি। ফলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র আমাদের অজানা। ঋণ আদায় না করে, ঋণ খেলাপিদের নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে কাগজে-কলমে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর মধ্যে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী মজা পাচ্ছে, তা আমার মাথায় ঢোকে না।

অন্যদিকে খেলাপি ঋণ বাড়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, খেলাপি সবসময় ঋণের কিস্তির ওপরে নির্ভর করে না। বিভিন্ন কারণে বিশেষ করে পেমেন্টের উপরও খেলাপি ঋণ বাড়া নির্ভর করতে পারে।

তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় খেলাপি ঋণও কিছুটা বেড়েছে। তবে তা খুব বেশি বাড়েনি। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ খেলাপি ঋণ কিছুটা কমে আসবে আশা করছি।

সারাবাংলা/জিএস/এনএস

১ লাখ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ বাংলাদেশ ব্যাংক

বিজ্ঞাপন

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর