Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দারাজের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণা, মূল হোতা গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ নভেম্বর ২০২১ ১৭:৫৮

ঢাকা: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দারাজের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে গ্রাহকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মূলহোতা আল ইমরান জুয়েলকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি।

বুধবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি মিডিয়া) ফারুক হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘গত ২৩ নভেম্বর রাতে নোয়াখালী থেকে দারাজের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণার অভিযোগে জুয়েলকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি ইউনিট। এ সময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি মোবাইল সেট, একটি ডেস্কটপ, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ইলেকট্রনিক কার্ড ও শতাধিক প্রি-অ্যাকটিভেটেড সিম কার্ড জব্দ করা হয়।’

উল্লেখ্য, তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক সেবার ব্যাপক প্রসার ও করোনাকালীন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে অনলাইন শপিংয়ের ওপর নির্ভরতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন এই বাজার ব্যবস্থার সুযোগ নিচ্ছে অনলাইন প্রতারক চক্র। প্রতারণার এই ধারায় সম্প্রতি যোগ হয়েছে আরও অভিনবত্ব। অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজের অনুকরণে ‘দারাজ সেল’ নামক ভুয়া ওয়েবসাইট ও ‘দারাজ বাংলাদেশ ফেসবুক’ পেজ বানিয়ে একটি চক্র বেশ কিছুদিন ধরে সাধারণ ভোক্তাদের কাছে পণ্য বিক্রয়ের নামে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল।

সম্প্রতি বিষয়টি আন্তর্জাতিক ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবার মালিকানাধীন অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের নজরে এলে তারা ডিএমপির সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের কাছে অভিযোগ করলে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারক চক্রের সদস্যরা একটি ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে দারাজের অনুকরণে ‘দারাজ সেল’ নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে। এরপর বিভিন্ন পণ্যে ৫০-৭০ শতাংশে পর্যন্ত আকর্ষণীয় ছাড়ে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করত। বিজ্ঞাপন তৈরির জন্য ব্যবহার করা হতো অন্যান্য ই-কমার্স সাইট থেকে ক্লোন করা ছবি। ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে তারা দারাজ বাংলাদেশ নামে একটি ফেসবুক পেজও তৈরি করেছিল। সাধারণ মানুষ এই ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজকে প্রকৃত দারাজ মনে করে কেনাকাটা করার জন্য দারাজ সেলের ওয়েবসাইটে দেওয়া নগদ নম্বরে টাকা পরিশোধ করতো। ওয়েবসাইটটি কারিগরি দিক বিবেচনায় এতটাই দক্ষতার সঙ্গে তৈরি করা হয়েছিল যে, সাধারণ মানুষ সহজেই প্রতারিত হতেন।

বিজ্ঞাপন

নিজেদের আড়াল করার জন্য প্রতারক চক্রটি সাধারণ গ্রাহকদের হেল্পলাইন নম্বর হিসেবে অনলাইন টেলিফোন সার্ভিস ব্রিলিয়ান্টের একটি নম্বর সরবরাহ করতো। এছাড়া বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য তারা ‘দারাজ সেল’ ওয়েবসাইটে দাফতরিক একটি ঠিকানাও দিয়েছিল। সুচতুর এই গ্রুপটি অর্থ পরিশোধের মাধ্যম হিসেবে নকল ওয়েবসাইটে একেক সময় একেক নগদ নম্বর দিয়ে অর্থ আত্মসাত করতো। এভাবে খুব অল্প সময়েই চক্রটি প্রতারণার মাধ্যমে ১০ লাখেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।

গ্রেফতারকৃত জুয়েল নিজেই একজন দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার এবং সে এই চক্রের মূল হোতা ও ওয়েবসাইটটির ডিজাইনার। এর আগেও এই প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে মিল রেখে ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণা করেছিল বলে স্বীকার করেছে। জুয়েলের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণা দারাজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর