চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন: ফের নেমেছে প্রমোদতরী ‘বে ওয়ান’
২৫ নভেম্বর ২০২১ ২২:৫৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সংকট কাটিয়ে ফের নতুন উদ্যমে যাত্রা শুরু করছে প্রমোদতরী ‘বে ওয়ান ক্রুজ’। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর পতেঙ্গা থেকে সাগরপথে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপ পর্যন্ত যাচ্ছে বিলাসবহুল এই প্রমোদতরী। করোনাকালে নয় মাস অলস বসে থাকা জাহাজটিকে আরও আধুনিকায়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মালিকপক্ষ। তবে জ্বালানি তেলে দাম বেড়ে যাওয়ায় জাহাজের ভাড়াও বেড়েছে ১৭ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) রাতে নগরীর পতেঙ্গা জেটি থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে বে ওয়ানের যাত্রা শুরুর সময়সূচি নির্ধারিত আছে। গত বছরের জানুয়ারিতে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের জাহাজটি যাত্রা শুরু করেছি। তবে করোনা মহামারির কারণে গত মার্চে অপারেশন বন্ধ রাখা হয়। এখন আগের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছাড়বে এবং শনিবার সকালে সেন্টমার্টিন থেকে চট্টগ্রামের পথে রওনা দেবে।
চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন ছেড়ে যাওয়ার আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে পতেঙ্গা জেটিতে বে ওয়ান কৃর্তপক্ষ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে। কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আবদুর রশিদ বলেন, ‘করোনায় আমরা দীর্ঘ নয় মাস জাহাজটি চালু করতে পারিনি। এই জাহাজ চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন আসা যাওয়ার খরচ হয় ২২ লাখ টাকা। এই টাকা আমাদের গ্রাহকদের থেকেই উঠাতে হবে। আমরা জাহাজটিকে আরও আধুনিকায়ন করেছি। আগে জাহাজের ছাদে ফাঁকা জায়গা ছিল। এখন সেখানে ৫০০ লোক একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’
ভাড়া কত বাড়ানো হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা জ্বালানি তেলের দামের সাথে সংযুক্তি রেখে সর্বোচ্চ ১৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছি। আগে ভিভিআইপি স্যুটের ভাড়া ছিল ৫০ হাজার টাকা। এখন পরিশোধ করতে হবে ৫৫ হাজার টাকা। চেয়ারের ভাড়া ছিল ৩৩০০ টাকা। সেটা এখন ৪০০০ টাকা। একইভাবে কেবিনের ভাড়াও বেড়েছে। এক ট্রিপে ১ হাজার ৮০০ পর্যটক নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে বে ওয়ানের।’
তবে বৃহস্পতিবার নতুন উদ্যমে যাত্রা শুরুর দিনে যাত্রী ছিল মাত্র ১০৯ জন। পরীক্ষা শেষে পিকনিকের মৌসুম শুরু হলে যাত্রী আরও বাড়বে বলে আশা মালিকপক্ষের।
সভায় দেওয়া তথ্যানুযায়ী, জাহাজটি সপ্তাহের প্রত্যেক বৃহস্পতিবার পতেঙ্গা থেকে রাত ১১টায় ছেড়ে পরের দিন সকাল ৭টায় সেন্টমার্টিন পৌঁছাবে। শুক্রবার সেন্টমার্টিন অবস্থান করে শনিবার বেলা ১১টায় পতেঙ্গার উদ্দেশে যাত্রা করে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এসে পৌঁছাবে। এরপর সপ্তাহের সোম ও বুধবার জাহাজটি একই নিয়মে যাতায়াত করবে। শুক্র ও মঙ্গলবার জাহাজটি সেন্টমার্টিন অবস্থান করবে। জাহাজে এখন প্রায় ২ হাজার ৫০০ আসনের ব্যবস্থা আছে।
জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৪৫০ ফুট এবং প্রস্থ ৫৫ ফুট। এটি ঘণ্টায় ২৪ নটিক্যাল মাইল বেগে চলাচল করে। এতে আছে প্রেসিডেন্ট স্যুট, বাঙ্কার বেড কেবিন, টু ইন বেড কেবিন, আরামদায়ক চেয়ারসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির আসন। এছাড়া একটি অভিজাত রেস্তোঁরা, স্বয়ংক্রিয় ভেন্ডিং মেশিন এবং কয়েন পরিচালিত ঝর্ণাও আছে। যাত্রীদের সেবায় মোট ১৬৭ জন ক্রু আছেন, যার মধ্যে ১৭ জন জাহাজটি মূলত পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন।
ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রশিদ বলেন, ‘আমাদের বে ওয়ান জাপান, সিঙ্গাপুরসহ বিদেশেও যেতে পারবে। সরকার যদি অনুমতি দেয় তাহলে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড হাজিদের জন্যও জাহাজ চালু করতে পারবে।’
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম