খালেদা জিয়ার কিছু হলে দায় বিএনপির: ওবায়দুল কাদের
২৬ নভেম্বর ২০২১ ১৮:২৭
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি চেয়াপারসন খালেদা জিয়া একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রতি ঔদার্য দেখিয়েছেন। খালেদা জিয়া কারাগারে না থেকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে পারছেন এটি প্রধানমন্ত্রীর ঔদার্যের কারণে সম্ভব হয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অসুস্থ খালেদা জিয়ার কিছু হলে এর দায়দায়িত্ব সরকারের ওপর নয়, এর দায় বিএনপি ও ফখরুলের ওপর পড়বে।’
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভার শুরুতে তিনি এ সব কথা বলেন। পরে ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সম্পাদকমণ্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব অভিযোগ করেছেন খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের জবাব হলো, বেগম জিয়ার পাশে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ বা সরকারের কেউ বেগম জিয়ার পাশে থাকেন না। ব্যক্তিগত পছন্দের চিকিৎসকরাই তাকে চিকিৎসা করাচ্ছেন। তার চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছেন। তার আশেপাশের লোকেরা হচ্ছেন বিএনপির লোকেরা, তার পরিবারের লোকেরা, স্লো পয়জনিং যদি করে থাকে আপনারা পাশের লোকেরাই করতে পারেন। হুকুমের আসামি শেখ হাসিনা হবে না, সেটি হলে ফখরুল সাহেব আপনি হবেন। আপনি হবেন হুকুমের আসামি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বেগম জিয়াকে আপনারা স্লো পয়জনিং করাচ্ছেন কি তাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার জন্য? আপনারা সে রকম কিছু করছেন বলেই কি আগেভাগেই উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে আজকে আওয়ামী লীগের ওপর, শেখ হাসিনার ওপর আপনারা দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মামলা আদালতে ঝুলিয়ে দিয়ে আপনারা সাতটা বছর নষ্ট করলেন। দিনের পর দিন মাসের পর মাস আপনারা আদালতে উপস্থিত হলেন না। মামলাকে বিলম্বিত করলেন। আন্দোলন করতে গিয়ে ব্যর্থ হলেন, খালেদা জিয়ার জন্য এখন এতো মায়াকান্না কাঁদেন, কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন করেন; সেই বেগম জিয়ার জন্য দেখবার মতো কার্যকর অর্থবহ একটি মিছিল রাজপথে করার দুঃসাহস আপনাদের ছিল না। এই সাহস আপনারা দেখাতে পারেননি। আজকে তার জন্য মায়াকান্না কাঁদছেন। লজ্জা করে না আপনাদের?’
দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘কোনো ইস্যু সৃষ্টি করে শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিহত করবে। দেশবিরোধী সব ধরনের ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত মোকাবিলা করতে সারাদেশে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থান সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে।’
শেখ হাসিনা মানবিক বলে তার সাজা স্থগিত করে বাসায় থেকে হাসপাতাল, বাসা থেকে হাসপাতালে থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন বলেও অবহিত করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এখানে সরকারের কোনো দায় নেই। কোনোকিছু হলে দায় বিএনপিকেই নিতে হবে এবং মির্জা ফখরুলকে নিতে হবে। এটি হচ্ছে আমাদের বক্তব্য।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচারও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. আব্দুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, সমাজকল্যাণ ও ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী,অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, অর্থ সম্পাদক আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খানসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এনআর/একে