Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘খালেদার চিকিৎসা সিংগাপুর-ব্যাংককেও নেই, চিকিৎসকরা অসহায়’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৮ নভেম্বর ২০২১ ১৯:৩৫

ফাইল ছবি: খালেদা জিয়া

ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লিভারের যে সমস্যাটিতে ভুগছেন, তার চিকিৎসায় তাকে বিশেষ এক ধরনের স্টেন্টিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকরা বলছেন, বিশেষ এই চিকিৎসা বাংলাদেশ বা উপমহাদেশ তো বটেই, থাইল্যান্ড-সিংগাপুরের হাসপাতালগুলোতেও নেই। বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি অ্যাডভান্সড হেলথ সেন্টারে বিশেষ কয়েকজন দক্ষ চিকিৎসকই কেবল এই চিকিৎসা দিতে সক্ষম।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা আরও বলছেন, বর্তমানে দেশের সর্বোচ্চ দক্ষ চিকিৎসকদের সহায়তায় সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়ে খালেদা জিয়াকে তারা বর্তমানে ‘স্থিতিশীল’ (স্ট্যাবল) রাখতে পেরেছেন। তবে তার চূড়ান্ত চিকিৎসার জন্য যেটি করা প্রয়োজন, সে প্রসঙ্গে তারা অনেকটাই ‘অসহায়’ (হেল্পলেস) বোধ করছেন।

রোববার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসায় এক ব্রিফিংয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসক দলের অন্যতম সদস্য ডা. এফ এম সিদ্দিকী এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ‘প্রকৃত’ তথ্য তুলে ধরতে এই ব্রিফিং আয়োজন করা হয় বলে জানান তিনি।

ডা. সিদ্দিকী বলেন, ১২ নভেম্বর দ্বিতীয়বারের মতো হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বাসায় চলে গিয়েছিলেন। কয়েকদিন ভালোও ছিলেন। এর মধ্যে হঠাৎ করে আমরা ইনফরমেশন পেলাম— তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছেন, কয়েক কদম হাঁটতে গিয়েই হাঁপিয়ে পড়ছিলেন। তখন আমি ডা. এ জেড জাহিদ হোসেনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, তিনি অত্যন্ত ফ্যাকাসে ও দুর্বল হয়ে পড়েছেন। শুক্রবার রাতেই ২টার সময় বাসা থেকে তার রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। সকালে রিপোর্টে আমরা দেখলাম, তার হিমোগ্লোবিন ড্রপ করেছে। তাৎক্ষণিকভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এরপর খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচানোর জন্য যেসব চিকিৎসা দেওয়া হয়, তার বিবরণ ধাপে ধাপে তুলে ধরেন ডা. সিদ্দিকী। তিনি বলেন, তার জীবন বাঁচানোর জন্য আমরা নানা ধরনের ফ্লুইড দিয়েছি। তার লিভারের সমস্যা মাথায় ছিল। এ ধরনের রোগীদের হেমোরেজ (রক্তক্ষরণ) হলে যেকোনো সময় মৃত্যুঝুঁকি থাকে। সে কারণে আমরা দ্রুত তার জন্য কিছু লাইফ লাইন চালু করি। তাকে দুই ব্যাগ পিআরবিসি (প্যাকড রেড ব্লাড সেল, কনসেন্ট্রেটেড আরবিসি) দেই। এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে তার রক্তক্ষরণের উৎস বের করার উদ্যোগ নেই। ডিপ সিডেশন (সম্পূর্ণভাবে অচেতন) না করে এই এন্ডোস্কোপি করা সম্ভব না। সে কারণে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়। পরে রাত ২টার দিকে তার ব্লাড প্রেশার ও পালস কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসতে থাকলে ডা. আরেফিন তার এন্ডোস্কোপি করেন।

ডা. সিদ্দিকী জানান, এরপর বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসায় খালেদা জিয়ার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে, আবার অবনতি হয়েছে। তার রক্তক্ষরণ বন্ধ হওয়ার পর আবার শুরু হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তারা জানতে পেরেছেন, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। তবে একাধিকবার এন্ডোস্কোপি করেও তার রক্তক্ষরণের উৎস তারা জানতে পারেননি। তবে খালেদা জিয়ার কোলনের পুরোটাতেই রক্ত জমাট বেঁধেছিল। সেটি তারা পরিষ্কার করেছেন। তবে যথাযথ চিকিৎসা না হলে খালেদা জিয়াকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে— সেটিও বলেন তিনি।

ডা. সিদ্দিকী বলেন, আমরা আমাদের সাধ্যমতো দেশের সবচেয়ে সেরা চিকিৎসকদের দিয়ে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) চিকিৎসা করে যাচ্ছি। কিন্তু তার যে চিকিৎসাটি প্রয়োজন, সেটি দেশে সম্ভব নয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, উপমহাদেশ তো বটেই, সিংগাপুর-ব্যাংককেও এ ধরনের চিকিৎসা নেই। এটি বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি অ্যাডভান্সড সেন্টারেই অত্যন্ত দক্ষ কয়েকজন চিকিৎসক করে থাকেন।

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

খালেদা জিয়া খালেদা জিয়ার চিকিৎসা টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘আমাদের সেনাবাহিনী যেন তৈরি থাকে’
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:২৯

আগস্টে কমেছে মূল্যস্ফীতি
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:০৭

সম্পর্কিত খবর