Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উপাচার্যের আশ্বাসে বেরোবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৮ নভেম্বর ২০২১ ১৮:৪৯

রংপুর: বিভাগীয় প্রধানের অপসারণ ও দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে উপাচার্যের আশ্বাসে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি সাময়িক প্রত্যাহার করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল দেখা করলে উপাচার্য তাদের দাবি আদায়ের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন এবং বিভাগের তালা খুলে দিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।

এর আগে, রোববার দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অর্থনীতি বিভাগের প্রধান জনি পারভিনের পদত্যাগসহ শিগগিরই ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে বিভাগের কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে প্রশাসন ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অর্থনীতি বিভাগ সেশনজটমুক্ত ও আইকিউএসি রেটিংয়ে প্রথম স্থানপ্রাপ্ত বিভাগ ছিল। কিন্তু জনি পারভীন বিভাগীয় প্রধান হওয়ার পর থেকে লাগাতার অনুপস্থিত থেকেছেন। করোনাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে অনলাইনে ক্লাস চালু করলেও তিনি এক বছর সাত মাসেও কোনো একাডেমিক সভা আহ্বান এবং শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা করেননি। ফলে বিভাগের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সেশনজটে পড়েছেন।

আরও পড়ুন- বেরোবি’র প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও

তারা আরও অভিযোগ করেন, জনি পারভীন অর্থনীতি বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের হয়রানি করছেন। তাকে রোববারের মধ্যে তাকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অপসারণ না করলে আন্দোলন অব্যাহত রাখার হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শিক্ষার্থীদের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। এই দলে ছিলেন সাদিয়া, সাহেদ ও রনি। সাক্ষাৎ শেষে তারা জানান, উপাচার্য তাদের দাবি শুনেছেন এবং দ্রুততম সময়ে এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। উপাচার্য জানতেন না যে অর্থনীতি বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। উপাচার্য তাদের কাছে কিছুদিন সময় চেয়েছেন। এর মধ্যে সমস্যা সমাধান করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের সদস্য সাদিয়া বলেন, উপাচার্যের প্রতি আমাদের বিশ্বাস আছে। তার আশ্বাসে আমরা আন্দোলন সাময়িক প্রত্যাহার করে নিয়েছি। তবে অতি দ্রুত দাবি আদায় না হলে আমরা কঠোর সিদ্ধান্ত নেব।

তবে এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদের কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর আগে, গত ১৮ নভেম্বর জনি পারভীনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তাকে বিভাগের প্রধান থেকে অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগপত্র জমা দেন বিভাগের ছয় শিক্ষক। অভিযোগপত্রে শিক্ষকরা উল্লেখ করেন, একাডেমিক সভায় অন্য শিক্ষককে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেন জনি পারভীন। কারও পরামর্শ না নিয়ে নিজের মতকে সবার ওপর চাপিয়ে দেন। বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সঙ্গে সবসময় অমানবিক আচরণ করেন, যা বিভাগের পরিবেশ ও শৃঙ্খলা নষ্ট করছে।

শিক্ষকরা আরও অভিযোগ করেন, জনি পারভীন একাডেমিক কমিটির প্রথম সভায় বিভাগের প্ল্যানিং কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সভার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শিক্ষকদের বাদ দিয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে উপাচার্যকে অন্তর্ভুক্ত করেন। কমিটি নিয়মের বহির্ভূত হওয়ায় বিভাগের অধ্যাপক ড. মোরশেদ হোসেন পদত্যাগ করেন। অনুপস্থিতির কারণে তার ডেস্কে বিভিন্ন আবেদনপত্র ও জরুরি কাগজপত্র আটকে থাকছে।

অভিযোগপত্রে বিভাগের অধ্যাপক ড. মোরশেদ হোসেন, সহকারী অধ্যাপক খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী অধ্যাপক শাফিউল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক বেলাল উদ্দীন ও প্রভাষক কাজী নেওয়াজ মোস্তফা সই করেছেন।

তবে এসব অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে জনী পারভীনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

সারাবাংলা/টিআর

অর্থনীতি বিভাগ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বেরোবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর