ইয়াবা বেচে কোটিপতি নূরুল হুদা
৮ এপ্রিল ২০১৮ ১৮:১৮
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: পাঁচ বছর আগেও ছিলেন বাসের হেল্পার, ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ দশা। এখন চট্টগ্রাম নগরীতে তার পাঁচটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। স্ত্রীও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস মিলিয়ে গাড়িই রয়েছে কমপক্ষে পাঁচটি। সন্তানরা পড়ে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে।
নূরুল হুদার (৩৯) আঙুল ফুলে কলা গাছ- অনেকের মনেই জন্ম দিয়েছিল প্রশ্নের। আর সেই প্রশ্নের উত্তর মিলেছে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে।
নগর গোয়েন্দা পুলিশ নূরুল হুদাকে গ্রেফতারের পর জানতে পারে, তার অর্থবিত্তের গোপন সেই রহস্যের নাম ইয়াবা। নিষিদ্ধ মাদক ইয়াবা বেচেই গত পাঁচ বছরে কোটিপতি হয়েছেন নূরুল হুদা।
রোববার (৮ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর ষোলশহর এলাকায় একটি প্রাইভেট কারে তল্লাশি চালিয়ে ১০ হাজার পিস ইয়াবা পায় গোয়েন্দা পুলিশ। এই অপরাধে নূরুল হুদা এবং তার গাড়ি চালক মোহাম্মদ করিমকে (২৭) আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় এসব তথ্য।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সঞ্জয় কুমার সিনহা সারাবাংলাকে বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলা শ্যামলী পরিবহনের বাসে সহকারী চালক (হেলপার) হিসেবে কাজ করতেন নূরুল হুদা। পাঁচ বছর আগে সেই চাকরি তিনি ছেড়ে দেন। এর আগেই তিনি টেকনাফ থেকে ইয়াবা এনে চট্টগ্রাম নগরীতে বিক্রি শুরু করেন। বেশ কিছু টাকা জমলে পর দুই বছর আগে চকবাজারের মতি টাওয়ারে কসমেটিকসের দোকান কেনেন। একই সময় মাইক্রোবাস কিনে ভাড়া দেন।
সঞ্জয় কুমার আরও জানান, এখন চকবাজারের মতি টাওয়ারে নূরুল হুদার কসমেটিকস ও পোশাকের তিনটি দোকান আছে। তার স্ত্রীর একটি বিউটি পার্লার আছে। এর বাইরে পাঁচলাইশ এলাকায় নূরুল হুদার একটি মোবাইলের দোকানও আছে। দু’টি প্রাইভেট কার ও তিনটি মাইক্রোবাস আছে। মাইক্রোবাসগুলো ভাড়ায় চলে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পাঁচলাইশের নাসিরাবাদ আবাসিক এলাকায় এলিগেন্ট টাওয়ারের চতুর্থ তলায় একটি অভিজাত ফ্ল্যাটে নূরুল হুদা বাস করেন, ফ্ল্যাটের ভাড়া ৩৫ হাজার টাকা। তিন মাস আগে তিনি ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া যান। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, এই এলাকায় তার কেনা একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
“তিন মেয়েকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ছে। তার রাজকীয় বাসাটি দেশ-বিদেশের মূল্যবান আসবাবে ঠাসা। নূরুল হুদা নিজেই স্বীকার করেছেন, ইয়াবা ব্যবসা করে তিনি গত পাঁচ বছরে কয়েক কোটি টাকা আয় করেছেন, যার সবগুলোই তিনি বৈধ ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন।”
টেকনাফের জনৈক মোহাম্মদ উল্লাহর সঙ্গে সিন্ডিকেট তৈরি করে ইয়াবার ব্যবসা করে আসছিলেন নূরুল হুদা। মোহাম্মদ উল্লাহকেও একই মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সঞ্জয় সিনহা।
সারাবাংলা/আরডি/এটি