গুলশান-বনানীর ফ্ল্যাটের চেয়েও বস্তির ভাড়া বেশি!
৩০ নভেম্বর ২০২১ ২৩:৩৩
ঢাকা: দেশের বস্তি এলাকায় একেকটি টয়লেট ব্যবহার করে থাকেন গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ জন, যা কোনোভাবেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বস্তি এলাকায় একটি বাতির জন্য দিতে হয় ২৫০ টাকা। দুই বাতি ও এক ফ্যান ব্যবহার করলে বস্তি এলাকায় মাসে ৭৫০ টাকা দিতে হয়। এছাড়াও মৌলিক অধিকার খর্ব করে বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হয় সরকারি পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস। বস্তিবাসীরা যে আয়তনের জন্য মাসে দুই হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা ভাড়া দেন, তা গুলশান-বনানীর অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়ার চাইতেও বেশি।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নগর হতদরিদ্রদের নাগরিক ও পরিষেবা সুরক্ষা অধিকার’ শীর্ষক সংলাপে মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য জানিয়েছেন কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ) উপদেষ্টা মো. মাহবুবুল হক।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার শহরের সেবা গ্রামে পৌঁছে দিতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এরই মধ্যে গ্রামে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট সেবা পৌঁছে দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
মাহবুবুল হক আরও বলেন, বর্তমান সরকার দারিদ্র্য বিমোচনে ১৪৩টি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। পাশাপাশি কর্মজীবী নারীদের এগিয়ে নিতে ডে-কেয়ার সম্পর্কিত আইন পাসের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডে ডে-কেয়ার স্থাপনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডা. দিবালোক সিংহ বলেন, ২০০৫ সালে রাজধানীতে মোট বস্তিবাসীর সংখ্যা ছিল ৩৪ লাখ ২০ হাজার ৫২১ জন, যা ঢাকার মোট জনসংখ্যার ৩৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। বস্তিবাসীরা তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশেষ করে তাদের জন্মনিবন্ধন ও আইডি কার্ড পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, অতি দরিদ্রদের বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকারের অধীন সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ডভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের আওতায় তাদের স্বাস্থ্যসেবা কার্ড দেওয়া দরকার। পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের আওতায় জন্ম নিবন্ধনের জন্য অনলাইন ফরমেটে সংশোধন/সংযোজন করে নগর দরিদ্রদের জন্য নিবন্ধন নিশ্চিত করা দরকার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবাইদুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, সমাজসেবা অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহা. কামরুজ্জামান, ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের প্রোগ্রাম পরিচালক গ্রিটা ফিটিরিয়াল্ড, শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর