বাধা আইন নয়, বাধা এই সরকার: ফখরুল
১ ডিসেম্বর ২০২১ ১৪:২৪
ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। সরকার তাকে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না, আইনের কথা বলছে। অথচ এই আইনের মধ্যেই বলা আছে, ‘সরকার ইচ্ছে করলেই তাকে (খালেদা জিয়া) বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দিতে পারে। সুতরাং বাধা আইন নয়, বাধা হচ্ছে এই সরকার।‘
বুধবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে মহিলা দল আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে পূর্বঘোষিত ‘মৌন মিছিল’ কর্মসূচির পরিবর্তে এ সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গণতন্ত্রের মূলকণ্ঠ, যার কণ্ঠ উচ্চারিত হলে বাংলাদেশ উত্তাল হয়, সেই নেত্রী খালেদা জিয়াকে স্তব্ধ করে দিতে চায় সরকার। তাকে তারা কথা বলতে দিতে চায় না। তাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিয়েছে, সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আজকে বাংলাদেশের মানুষকে তার মৌলিক অধিকার, ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।’
মহিলা দলের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আজকে এখানে দাঁড়িয়ে কথা বললে হবে না। ঘরে ঘরে গিয়ে মা-বোনদের জাগিয়ে তুলতে হবে। সমস্ত মানুষকে একত্রিত করতে হবে, সংঘবদ্ধ করতে হবে। যে স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছিলাম ১৯৭১ সালে, আমাদের সেই কথা বলার স্বাধীনতা, সংগঠন করার স্বাধীনতাকে তারা সম্পূর্ণভাবে লুট করে নিয়ে গেছে; শুধুমাত্র তাদের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য। তাদের লুটপাটকে আরও তরান্বিত করার জন্য।’
‘আজকে সেই জন্য আমাদেরকে জীবন বাজি রেখে লড়াই করতে হবে। ১৯৭১ সালে আমরা যেভাবে লড়াই করেছি, আমাদের মা-বোনেরা যেভাবে লড়াই করেছে, মুক্তিযুদ্ধ করেছে, তারা যেভাবে ত্যাগ স্বীকার করেছে, আজকে আবার গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য, ভোটাধিকার রক্ষা করার জন্য সর্বপরি গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য সবাইকে লড়াই করতে হবে, ত্যাগ স্বীকার করতে হবে’-বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের নেতৃত্বে মৌনমিছিলে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সহ-সভাপতি জেবা খান, সাবেক সংসদ সদস্য নীলোফার চৌধুরী মণি প্রমুখ।
গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর আগে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এবছর এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত টানা ৫৪ দিন হাসপাতালে ছিলেন তিনি। খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। নতুন করে তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। দেশে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছর ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয় সরকার। তখন থেকে তিনি গুলশানের ভাড়া বাসা ফিরোজা’য় রয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে বেশ কয়েকবার আবেদন করেছে তার পরিবার। কিন্তু সরকার সেই আবেদন আমলে নেয়নি। এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য হলো- সাময়িক মুক্তির শর্ত অনুযায়ী তাকে দেশে রেখেই চিকিৎসা দিতে হবে। বিদেশে যেতে হলে কারাগারে ফিরে আবেদন করতে হবে।
সারাবাংলা/এজেড/এএম