বিজয়ের মাসে ৫জি যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ: ওবায়দুল কাদের
১ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:০২
ঢাকা: বিজয়ের মাসে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ৫জি যুগে প্রবেশ করবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় দেশে ৫জি প্রযুক্তির সেবা পরীক্ষামূলকভাবে শুভ উদ্বোধন করবেন। সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ৫জি চালুর কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।’
বুধবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)’র কাউন্সিল হলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি’র উদ্যোগে ‘৫জি: দ্য ফ্রান্টিয়ার টেকনোলজি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং উপ-কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. সাহাব উদ্দিন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। উপ-কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো. রনক আহসানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হোসেন মনসুর।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২০১৮ সালে ঘোষিত বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশে ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সর্বাধুনিক মোবাইল প্রযুক্তি সেবা ৫জি চালু করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও বিটিআরসি নির্দেশনা মোতাবেক রাষ্ট্রীয় একমাত্র মোবাইল অপারেটর টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড প্রাথমিক পর্যায়ে বর্তমান ৪জি নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযোগস্থাপনপূর্বক সীমিত পরিসরে আগামী ডিসেম্বর মাসে ৫জি চালু করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। প্রথমে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সরকারি কার্যালয় ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসমূহে সীমিত পরিসরে ৫জি সেবা চালু হবে। ২০২৩ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে এই সেবা দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্ভর এলাকাসমূহে বিস্তারের পরিকল্পনা রয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘৫জি প্রযুক্তি সেবা কেবল গ্রাহকের মোবাইল ব্রডব্যান্ড ও ভয়েস কলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিল্প প্রতিষ্ঠান, সরকার ও এন্টারপ্রাইজ এবং ইউটিলি সার্ভিস প্রোভাইডাররা আইওটি, হিউম্যান টু মেশিন, মেশিন টু মেশিন ডিভাইস ব্যবহার করে ক্রিটিক্যাল মিশন সার্ভিস, স্মার্ট গ্রিড, স্মার্ট সিটি, স্মার্ট ফ্যাক্টরি সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। মুজিব বর্ষে এটি একটি বিশাল উদ্যোগ। ৫জি প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল গ্রাহকরা অধিকতর উন্নত গুণগত মানের ভয়েস কল ও ৪জি হতে ২০ গুণ দ্রুত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে সক্ষম হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘৫জির মাধ্যমে চালকবিহীন গাড়ি চলবে রাস্তায়। ফাইভ জি চালু হলে কল ড্রপের সংখ্যা কমে যাবে বলে আমরা আশা করি। মানুষ ও ডিভাইসের মধ্যে তৈরি হবে জিরো ডিসটেন্স কানেক্টিভিটি। বিগডাটা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নে ৫জি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ৫জি চালু হলে আমূল পরিবর্তন আসবে চিকিৎসা ও শিক্ষা খাতে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কিংবা অগমেন্টেড রিয়েলিটির এক্সপেরিয়েন্স নেওয়া ৫জির কল্যাণে আরো সহজ হয়ে যাবে। ফেসবুকসহ বিশ্বের সব বড় কোম্পানিগুলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং মেটাভার্স নিয়ে কাজ করছে যা হবে অদূর ভবিষ্যতের মূল নিয়ামক প্রযুক্তি। আর এই প্রযুক্তিগুলোই আমাদের তরুণদের কাছে পৌঁছে দিতে চান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
বাংলাদেশকে ডিজিটাল করার লক্ষে ২০১৩ সালে শেখ হাসিনার সরকার থ্রিজি প্রযুক্তির সেবা চালু করে এবং ২০১৮ সালে চতুর্থ প্রজন্মের টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি বা ফোরজি সেবা চালু করে, এরই ধারাবাহিকতায় আমরা মুজিব বর্ষে পদার্পণ করতে যাচ্ছি ৫জি যুগে। ২০২০ সালে করোনা কালে সারাদেশ লকডাউনে ছিল, থ্রিজি/ফোরজি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছাত্ররা অনলাইন এ ক্লাস করেছে, ডক্টর ঘরে বসে চিকিৎসা দিতে পারছে, বিচার বিভাগ অনলাইন তাদের বিচার কাজ চালিয়ে গেছে। আর এ সব কিছু সম্ভব হয়েছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদেশী নেত্রীতে এবং আর্কিটেক্ট অফ ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি সজীব ওয়াজেদ জয় এর বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলে।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং উপ-কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, ‘আগামীতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে যেন বাংলাদেশ বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারে সেই জন্য প্রযুক্তিগত অবকাঠামো গড়ে তোলা, মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং সরকারি সেবাসমূহ দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোড়গোড়ায় পৌছে দিতে নিরলসভাবে ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা। একটি প্রযুক্তি নির্ভর জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রম ও আত্মনিবেদন আমাদেরকে অনুপ্রানিত করে। আমরা স্বপ্ন দেখি, প্রধানমন্ত্রী ও তার সুযোগ্য আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এর নেতৃত্বে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে শুধু ইকোনমিক ও পলিটিক্যাল ডিপ্লোমেসি নয়, সায়েন্স ডিপ্লোমেসি ও টেকনোলজিক্যাল ডিপ্লোমেসিতেও আগামী দিনে বাংলাদেশ বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে। এর মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে।’
সারাবাংলা/এনআর/একে