Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৯ খাতের সংস্কারে শতাধিক সুপারিশ দুদকের


৮ এপ্রিল ২০১৮ ২০:২৬

।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা : দেশের ৯ প্রতিষ্ঠান-খাতের সংস্কার ও দুর্নীতি প্রতিরোধে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে শতাধিক সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (৮ এপ্রিল) বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে ২০১৭ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে দুদকের পক্ষ থেকে এ সুপারিশ করা হয়। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতিবেদন পেশ করেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। প্রতিবেদন হস্তান্তরকালে দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, দুদক সচিব ড. শামসুল আরেফীন উপস্থিত ছিলেন।

বার্ষিক প্রতিবেদনে দুদকের পক্ষ থেকে যেসব প্রতিষ্ঠান-খাতের তালিকা করা হয়েছে সেগুলো হলো- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর, চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স, আয়কর বিভাগ, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ।

শিক্ষা : প্রতিবেদনে বলা হয়, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত গ্রেডিং পয়েন্ট বিন্যাস করে একটি বেঞ্চ মার্ক নির্ধারণ করা জরুরি। ওই বেঞ্চ মার্কের কম প্রাপ্ত নম্বরের শিক্ষার্থীরা সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল, চিকিৎসা ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন না। তাদের বিভিন্ন কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। এ জন্য দেশে পর্যাপ্ত পলিটেকনিক, মনোটেকনিক ও ভোকেশনাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।

এছাড়াও সুপারিশে বলা হয়েছে— বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতিত সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের জন্য আলাদা কমিশন গঠন করতে হবে। প্রশ্নফাঁস প্রতিরোধ সকল পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হতে হবে সৃজনশীল ও বর্ণনামূলক।

সড়ক ও জনপথ : সড়ক মহাসড়ক যানবাহনে ওভার লোডিং কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, সড়কের স্থায়িত্ব বৃদ্ধিও জন্য কংক্রিটের সড়ক নিমার্ণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে সুপারিশে।

এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন, নিমার্ণ ও মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিজ খরচে বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্পণ করার সুপারিশ করেছে দুদক।

স্বাস্থ্য: ডাক্তাদের ইন্টার্নশিপ এক বছরের পরিবর্তে দুই বছর রাখার সুপারিশ করেছে দুদক। বাকি একবছর ওই চিকিৎসকদের উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোয় বাধ্যতামূলক রাখার কথা বলেছে দুদক। এছাড়া কমিশন বাণিজ্য বন্ধের বিষয়ে তাগিদ দিয়েছে দুদক।

এছাড়া আরও ছয়টি খাতে বিভিন্ন বিষয় সংস্কার চেয়ে সুপারিশ করেছে দুদক।

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে দুদকে ১৭ হাজার ৯৫৩টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব অভিযোগ মধ্যে মামলা হয়েছে মাত্র ২৭৩টি।

২০১৬ সালে ১২ হাজার ৯৯০টি অভিযোগ জমা পড়ে, এর মধ্যে মামলা হয়েছে ৩৫৯টি। প্রতিবেদনে দুর্নীতি দমন কমিশনে ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে অভিযোগ বেশি জমা পড়লেও যাচাই-বাছাই শেষে মামলা হয়েছে কম।

২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে প্রায় ৩৮ শতাংশ অভিযোগ বেশি জমা পড়াকে কমিশনের প্রতি ‘জনআস্থা বৃদ্ধি’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে।

মামলা কম হওয়ার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়— বহু অভিযোগ ছিল কমিশনের ‘তফসিল বহির্ভূত অভিযোগ’। এছাড়া মামলা দায়েরে ‘অধিকতর সতর্কতা’ অবলম্বন করা হয়েছিল।

২০১৭ সালে কমিশনে আসা অভিযোগ থেকে ১ হাজার ৪৪৫টি অভিযোগ অনুসন্ধান করা হয়। আর ২০১৬ সালে কমিশনে আসা অভিযোগ থেকে ১ হাজার ৭৬৬ টি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে দুদকের মামলার সাজা হয়েছে ৬৮ শতাংশ এবং নিষ্পতিকৃত মামলার সংখ্যা ২১৪।  ২০১৬ সালে ছিল ৫৪ শতাংশ এবং মামলা নিস্পত্তি হয়েছিল ২৩৭টি।

এছাড়া দুদকের মামলায় ২০১৬ সালে গ্রেফতার হয় ৩৮৮ জন আর ২০১৭ সালে গ্রেফতারা করা হয় ১৮২ জনকে।

এদিকে প্রতিবেদন জমা শেষে দুদক চেয়ারেম্যান ইকবাল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুদক কোনো পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করছে না। অপরাধের ধরন দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কে কোন রাজনৈতিক দলের তা দুদকের কাছে বিবেচ্য নয়।’

দুদকের কার্যক্রমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমালোচনা প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুদক যে কোনো সমালোচনাকে স্বাগত জানায়। সমালোচনার মাধ্যমে দুদক তার ভুল সংশোধন করতে পারবে।’

সারাবাংলা/জিএস/একে


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর