নভেম্বরে নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত ৪৭, আহত ৫ শতাধিক
২ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:৩০
ঢাকা: দেশে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নভেম্বর মাসে ৯৮ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব সহিংসতার ঘটনায় কমপক্ষে ৪৭ জন নিহত, ৭৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত ও পাঁচশ’র বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। নিহত ৪৭ জনের মধ্যে ১৬ জন প্রতিপক্ষের গুলিতে এবং চার জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে মারা গেছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও নিজেদের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। ব্যাপক সহিংসতায় নির্বাচনি সৌন্দর্য ম্লান হয়েছে। স্বজন হারানো বাড়িতে কান্না ও প্রানফাটা আহাজারি মানুষের মনে নিদারুণ কষ্টের সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছে তারা।
নভেম্বর মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতির এই রিপোর্ট অনুযায়ী নির্বাচনি সহিংসতায় নিহতদের মধ্যে প্রায় সকলেই ভোটে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সমর্থক বা কর্মী। সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে নরসিংদী জেলায়- ১১ জন। অন্যদিকে, ২৯ নভেম্বর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নিহতের ঘটনা ঘটে, যা ছিল ১১ জন। নির্বাচনি সহিংসতায় একজন নারী, ছাত্র ও একজন বিজিবি সদস্যর মৃত্যু হয়েছে। নীলফামারিতে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ৬টি সংখ্যালঘু পরিবারের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্র দখলসহ নানা অনিয়মের কারণে ২১ কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামালের সই করা ওই রিপোর্টে এমএসএফ বলছে, নির্বাচন কমিশনসহ দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে সহিংসতামুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সবধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, বাস্তবে দেখা গেছে উৎকন্ঠা, সহিংসতা, হানাহানি ও হতাহতের মাত্রা নতুনভাবে যোগ হয়েছে। নির্বাচনি সংঘাত, সহিংসতা ও নানাবিধ অনিয়মের কারণে স্বাধীনভাবে নিজেদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করার অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে, ধারাবাহিকভাবে নির্বাচনগুলো প্রহসনে পরিণত হয়েছে পাশাপাশি প্রশ্নবিদ্ধ এ সব নির্বাচন ক্রমাগত আস্থা হারাচ্ছে।
পর্যবেক্ষণে তারা বলছে, ভোটে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগই। ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে দলীয়ভাবে মনোনীত একক প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। মনোনয়ন না পেয়ে অধিকাংশ স্থানেই আওয়ামী লীগের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উভয়পক্ষ নির্বাচনী মাঠ দখলে সংঘাত ও সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের নিজেদের মধ্যকার সংঘাত-হিংস্রতা নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরুপায় হয়ে পড়ে। অনেক জায়গাতেই স্থানীয়ভাবে দুই পক্ষই শক্তিশালী হওয়ায় পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে গেছে অথবা উভয়পক্ষের সাথে সখ্যতা থাকার কারণে নির্বাচনীকালীন সহিংসতা রোধের ক্ষেত্রে কোন পদক্ষেপই নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সারাবাংলা/আরএফ/একেএম
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ইউপি নির্বাচন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নির্বাচনি সহিংসতায় মৃত্যু