ঢোলার হাট ইউপিতে প্রার্থী নির্বাচনে সমালোচনায় আ.লীগ
৩ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:৩২
ঠাকুরগাঁও: চতুর্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১৯টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী এবং সমর্থকরা চষে বেড়ালেও ঢোলারহাট ইউনিয়নে নৌকা মার্কার প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে তেমন কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এতে হাট-বাজার থেকে শুরু করে সব জায়গাতেই চলছে আলোচনা আর সমালোচনার ঝড়। সঠিকভাবে প্রার্থী নির্বাচন করতে না পারায় এই সমালোচনায় পড়েছেন বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ২৬ ডিসেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ঢোলার হাট ইউনিয়ন থেকে দলীয় ভাবে তিন জনের নাম চূড়ান্ত করে পাঠানো হয়। যার মধ্যে অজিত কুমার রায় জেলা পৌরশহরের কলেজপাড়ার ভোটার, অখিল চন্দ্র রায় ঋণ খেলাপি এবং সীমান্ত কুমার বর্মন দুদকের মামলার আসামি।
ঢোলারহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, আওয়ামী লীগ সঠিক ভাবে দলীয় প্রার্থী নির্বাচন করতে পারেনি। যে কারণে দুই জনকে মনোনয়ন দিলেও দুজনেরই মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। একজন দলীয় সিদ্ধান্তে বাতিল করা হয় এবং অপরজনকে ঋণ খেলাপির কারণে উপজেলা যাচাই বাছাই কমিটি বাতিল করে।
গত ২০ নভেম্বর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় সীমান্তের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়। পরে ২১ নভেম্বর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়। সীমান্তের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ২৩ নভেম্বর অখিল চন্দ্রের নাম উল্লেখ করে চূড়ান্ত তালিকা পাঠানো হয়।
এদিকে গত ৩০ নভেম্বর দুদকের দায়ের করা মামলা হতে চেয়ারম্যান সীমান্ত কুমার বর্মণকে শুনানি শেষে অব্যাহতি দেয় ঠাকুরগাঁও সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত। অপরদিকে অখিল চন্দ্র রায় নৌকার প্রতীক ধরে রাখতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবরে আপিল করেন। যার শুনানি হবে আগামী ৫ ডিসেম্বর। সেদিনই চূড়ান্ত হবে কে হবেন এই নৌকার মাঝি।
স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী জাকির মোস্তাফিজ মিলু বলেন, একভাবে দেখতে গেলে এটা ব্যর্থতাই, কারণ তারা একজনকে মনোনয়ন দিয়ে পরবর্তীতে বাতিল করে আরেক জনকে দেওয়াটা।
তিনি আরও বলেন, যে প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করল, সেটা মনোনয়ন দেওয়ার আগেই পর্যালোচনা করতে পারত। সামগ্রিকভাবে অনেকেই মনে করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বেশি জায়গায় জিতেছে। অপ্রতিদ্বন্দী একটা অবস্থা দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সমস্ত জায়গায় তৃণমূলের মধ্যে এটা নিয়ে ভাগাভাগি তৈরি হচ্ছে, উপদল তৈরি হচ্ছে। সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও একটা খারাপ ধারণা তৈরি হচ্ছে, ভবিষ্যতে খারাপ ব্যাপার হতে পারে, সংগঠনের মধ্যে একটা বিবেদের সৃষ্টি হচ্ছে।
বিশিষ্ট সমাজসেবক আবু মহিউদ্দীন বলেন, সম্প্রতি ২৮ নভেম্বর যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নে, সেখানে দেখা গেছে একজন প্রার্থী যার কোনো নাম ডাকই ছিল না এবং নির্বাচনের দিন নির্বাচন বর্জন করল। সে কি ভাবে বিজয়ী হলো? এটাতো মানুষ প্রত্যক্ষভাবে দেখেছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। নির্বাচনে যে অবস্থা বিরাজ করছে সেটা আমাদের ভাবিয়ে তুলছে।
তবে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলাম এটাকে ব্যর্থতা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, একজন মানুষ দণ্ডপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে দলীয়ভাবে ৪-৫ জনের নাম পাঠানো হয়েছে, সেক্ষেত্রে সকলের যে হবে সেটা তো বলা যাবে না।
সারাবাংলা/এসএসএ