Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ল ৩ বর্গা চাষির সোনালি ফসল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৩ ডিসেম্বর ২০২১ ১১:১৩

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাড়াই করার জন্য জোগাড় করে রাখা ধানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এক দিনের ব্যবধানে দুই বার দেওয়া আগুনে তিন বর্গা চাষির তিন বিঘারও বেশি জমির ফসলি ধান পুড়ে ছাই হয়েছে। ফসল হারিয়ে দিশেহারা তিন কৃষক।

গত রোববার (২৮ নভেম্বর) ও মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের পলশা মিশন বাজার সংলগ্ন পলশা আলিম মাদরাসার পেছনের এসব জমিতে কে বা কারা আগুন দেয়।

ভুক্তভোগী কৃষক, শ্রমিক ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, পলসা আলিম মাদরাসার পেছনে ও এস এম ভাটার পাশে রোববার দিবাগত রাতে দুই কৃষকের ১৪ কাঠা জমিতে আগুন দেওয়া হয়। এক দিন পর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ফের আরেক কৃষকের ৩০ কাঠা জমিতে আগুন দেওয়া হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা হলেন— সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের পলশা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত কালামের ছেলে আব্দুর রহিম, একই গ্রামের বিলাতের ছেলে মান্নান ও মো. রফিক। তাদের মধ্যে আব্দুর রহিমের ৮ কাঠা, মান্নানের ৬ কাঠা ও রফিকের ৩০ কাঠা জমির ধান আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। সবগুলো ধানই জমি থেকে কেটে নিয়ে স্তূপ করে রাখা ছিল।

কৃষি শ্রমিক আমিরুল ইসলাম বলেন, ১০-১২ দিন আগে আমিসহ চার জন শ্রমিক ধানগুলো কেটেছিলাম। শুকিয়ে চার-পাঁচ দিন আগে বেঁধে এক জায়গায় স্তূপ করে রেখেছিলাম। দুয়েকদিন পরই ধানগুলো মাড়াই করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই কে বা কারা আগুন দিয়ে ধানগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মান্নান বলেন, ডিম বিক্রি করে খাই। সামান্য জমিতে ধান চাষ আবাদ করেছিলাম। কিন্তু আগুন সব শেষ করে দিলো। ধানগুলো নিয়ে চলে গেলেও মনে শান্তি পেতাম। কারও না কারও কাজে তো লাগত।

ধারদেনা করে ৩০ কাঠা জমি আবাদ করেছিলেন দিনমজুর রফিক। তিনি বলেন, ২৫ হাজার টাকা মতো দেনা হয়ে গেল। আর কোনো ধানও নেই। সব শেষ হয়ে গেল। সন্ধ্যার দিকেও দেখে এসেছিলাম। সবই ঠিকঠাক ছিল। ভোরে জমিতে গিয়ে দেখলাম সব শেষ। আল্লাহর কাছে বিচার দেওয়া ছাড়া কিছু করার নেই।

স্থানীয়রা বলছেন, তিন কৃষকই অত্যন্ত দরিদ্র। দুর্বৃত্তরা অত্যন্ত গর্হিত কাজ করেছে। এটি কাকতালীয় বা বিছিন্ন ঘটনা হতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কৃষক ও শ্রমিকরা খুবই আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানান তারা।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফজলে রাব্বী রেনু জানান, আগুনের ধান পোড়ার পর তিন কৃষক আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। রাতের অন্ধকারের ঘটনা, সন্দেহের পরিপ্রেক্ষিতে কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তাই তাদের থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দিয়েছি। আগুনে ধান পোড়া তিন কৃষকই খুব অসহায়।

বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বা ইউপি সদস্যদের বিষয়টি আমাকে জানাননি। রাতের মধ্যেই স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউপি সদস্যের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করব। কে বা কারা এমন কাজ করছে, সে বিষয়েও খোঁজ নেব। ইউনিয়ন পরিষদ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে রয়েছে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইফফাত জাহান জানিয়েছেন, কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

সারাবাংলা/টিআর

দুর্বৃত্তের আগুন ধানে আগুন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

এখনো সালমানকে মিস করেন মৌসুমী
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৩

সালমান শাহ্‌কে হারানোর ২৮ বছর
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৪

সম্পর্কিত খবর