ঢাকা: রাজধানীর দক্ষিণখান এবং কুষ্টিয়া থেকে র্যাব কর্মকর্তা পরিচয়ে সেনাবাহিনীতে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে পাঁচ জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব দাবি করেছে, তারা সবাই একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে তারা চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে আসছিল।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১২ এবং র্যাব-১ এর যৌথ দল ঢাকার দক্ষিণখান থানার আশকোনা ও কুষ্টিয়া তিন জনকে আটক করে। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
তিনি বলেন, র্যাব কর্মকর্তা পরিচয়ে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে কুষ্টিয়ার স্থানীয় দুই যুবকের কাছে অর্থ নেওয়ার অভিযোগে গত ২ ডিসেম্বর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১২ এর একটি দল তাজন হোসেন (৩২), সাইফুল ইসললাম শেখ (৩০) ও সাবান আলী (৬৮) নামে তিন জনকে আটক করে। এসময় সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে র্যাবের একটি ভুয়া আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, সাইফুল নিজেকে র্যাব-৪ এর অধীনে সাভার ক্যাম্পে কর্মরত ক্যাপ্টেন শাহরিয়ার ইসলাম এবং তাজন হোসেন নিজেকে র্যাব-১২ এ কর্মরত মেজর মশিউর রহমান নামে নিজেদের পরিচয় দিত। কুষ্টিয়ার স্থানীয় একজন ঘটক সাবান আলীকে সাইফুল ইসলাম চাকুরি প্রার্থী সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করত। ঢাকার আশকোনার একটি কম্পিউটারের দোকান থেকে সে র্যাবের ভুয়া আইডি কার্ড তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে সাইফুল।
পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই রাতে র্যাব-১ এর সহায়তায় র্যাব-১২, সিপিসি-১ দল ঢাকার দক্ষিণখান থানার আশকোনায় অবস্থিত একটি কম্পিউটার দোকান থেকে র্যাবের ভুয়া আইডি তৈরিতে পারদর্শী এস এম জাহিদুল ইসলাম (২৮) এবং কাজী শাহীন (৩০) কে হাতেনাতে আটক করে। এসময় তাদের কম্পিউটারে রক্ষিত র্যাবের ভুয়া আইডি কার্ড ও সেনাবাহিনীতে ভর্তির নিয়োগপত্র জব্দ করা হয়েছে বলে দাবি করেন র্যাব-১ এর সিও মোমেন।
র্যাব-১ জানিয়েছে, আটক সাইফুল ইসলাম এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। এরপর সে দীর্ঘ ১১ বছর হা-মীম নামক একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে নিরাপত্তা বিভাগে চাকরি করেছে। করোনা মহামারির সময় গার্মেন্টস কারখানা থেকে চাকুরিচ্যুত হওয়ার পর সে এই পেশায় জড়িত হয়।
আটক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলায় সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে দুই জন যুবকের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেওয়ার পর ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগে মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানায় একটি মামলা চলমান রয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।