বিশ্বের ৩৮টি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। উল্লেখ্য যে, দুই দিন আগেও এ সংখ্যা ছিল ২৩। তবে এ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়ে এখনও কারো মৃত্যু হয়নি। শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান লিন্ডমেয়ার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
ডব্লিউএইচও মুখপাত্র ওমিক্রন ঠেকাতে ভ্যাকসিন কোম্পানিগুলোর প্রয়াসের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে এবং বিজ্ঞানের উপর আস্থা রাখতে হবে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে বলা হয়েছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের প্রকৃত সক্ষমতা সম্পর্কে জানতে এবং প্রতিষেধক ও চিকিৎসার সঠিক উপায় বের করতে আরও কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড-১৯ টেকনিক্যাল প্রধান মারিয়া ফন কেরখোভ ওই সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা ওমিক্রনের বিস্তার লক্ষ্য করছি। এ ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ পর্যন্ত আমরা বিশ্বের ৩ টি দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করেছি।’
একই সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হেলথ ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইক রায়ান বলেন, ‘স্পষ্টভাবে আমরা দেখছি, ভ্যারিয়েন্টটি খুব দক্ষতার সঙ্গে সংক্রমিত হচ্ছে। আমরা এর আগে ডেল্টার ক্ষেত্রে এমনটা দেখেছি। আবারও একই ঘটনা ঘটছে। তাই এবার আমাদের সামনে এমন কিছু ঘটছে যা দেখে অবাক হওয়া উচিত নয়।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনে প্রায় ৩০টি মিউটেশন রয়েছে, যা মানুষের কোষের সঙ্গে আবদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়। সংস্থাটির মতে, এর মধ্যে কিছু মিউটেশন উচ্চতর সংক্রমণ ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ফাঁকি দেওয়ার কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত। অর্থাৎ, ভ্যারিয়েন্টটি মানুষের শরীরের সুরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দেওয়ার সক্ষমতা রাখে।
আরও পড়ুন
- ওমিক্রনের পুনঃসংক্রমণের হার ডেল্টা ও বিটার চেয়ে ৩ গুণ বেশি
- ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ ডব্লিউএইচওর বিজ্ঞানীর
উল্লেখ্য যে, গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। এরপর আফ্রিকার দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া যায়। সর্বশেষ তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত ইউরোপ-এশিয়া-আমেরিকা মহাদেশের প্রায় ৩৮টি দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওমিক্রনকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বা উদ্বেগের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ভ্যারিয়েন্টটি সর্বশেষ গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালানো ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়েও দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।