Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফেসবুক স্ট্যাটাসে ক্ষমা চাইলেন ডা. মুরাদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৭ ডিসেম্বর ২০২১ ১৩:৪৩

ঢাকা: তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে সদ্য পদত্যাগ করা ডা. মুরাদ হাসান নিজের দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে ক্ষমা চেয়েছেন। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড পেজ থেকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এই ক্ষমা চান।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন—

‘আমি যদি কোন ভুল করে থাকি অথবা আমার কথায় মা-বোনদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মমতাময়ী মা দেশরত্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল সিদ্ধান্ত মেনে নিবো আজীবন।

জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু’

ফেসবুক লাইভে বিতর্কিত মন্তব্য এবং অডিও ফাঁস হয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে মঙ্গলবার সকালে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন ডা. মুরাদ হাসান।

এর আগে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) ডা. মুরাদ হাসানকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানিয়েছিলেন।

গত শুক্রবার ৩ ডিসেম্বর এক লাইভ অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী চলমান বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলছিলেন। ওই সময়ই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে পলাতক তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করে বসেন তিনি। মুহূর্তেই তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যকে অভব্য, শিষ্টাচার বহির্ভূত, নারীবিদ্বেষী, কুরুচিপূর্ণ বলে অভিহিত করেন অনেকেই। সরকারের দায়িত্বশীল একটি পদে থেকে এমন বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়— এমনটি বলেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীও।

প্রতিমন্ত্রী নিজে অবশ্য এমন বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান-দাবি সবকিছুকেই নাকচ করে দেন। সারাবাংলার সঙ্গে আলাপে ডা. মুরাদ বলেন, সমালোচকদের গালিগালাজ তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। নিজ দলের সমালোচকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘উনারা নিজেদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেয়েও বড় নেতা মনে করেন।’

বিজ্ঞাপন

এরপরই রোববার (৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে ডা. মুরাদ হাসানের একটি ফোনকল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। চিত্রনায়ক ইমন ও চিত্রনায়িকা মাহির সঙ্গে সেই কথোপকথনেও ডা. মুরাদকে অশালীন কথা বলতে শোনা যায়। মাহিকে হোটেল সোনারগাঁওয়ে তার ভাড়া করা রুমে আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিনি না এলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে তাকে তুলে নেওয়া হবে। ওই সময় তাকে যৌন সহিংস কথাবার্তা বলতেও শোনা যায়।

জাইমাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য এবং ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় চরম বিতর্কের মুখে পড়েন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ। নারী অধিকারকর্মীসহ রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রীর প্রতি। কোনো কোনো বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগও চাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবহিত হওয়ার পর তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলেন।

বিভিন্ন ইস্যুতে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসা ডা. মুরাদের জন্য নতুন নয়। কিছুদিন আগে বাহাত্তরের সংবিধানে ফেরার দাবি জানিয়ে নিজ দলের মধ্যেই সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। সংবিধানে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম ও রাষ্ট্রধর্ম থাকতে পারে না— এমন মন্তব্যও তিনি আরেক অনুষ্ঠানে করেন।

ডা. মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য। পেশায় চিকিৎসক এই রাজনীতিবিদ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। পরে ২০১৯ সালের মে মাসে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএসএ

ডা. মুরাদ ডা. মুরাদ হাসান মুরাদ হাসান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর