বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ৫০ বছরে জাপানে মৈত্রী দিবস পালিত
৭ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:১৩
ঢাকা: জাপানের রাজধানী টোকিওতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে দেশ দুটির দূতাবাস যৌথভাবে মৈত্রী দিবস পালন করেছে।
দিবসটি পালনের অংশ হিসেবে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি হোটেলে সংবর্ধনা ও সান্ধ্যভোজের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত পার্লামেন্টারি ভাইস মিনিস্টার হোন্ডা তারো। জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ ও ভারতের রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় কুমার ভার্মা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিকে স্বাগত জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোন্ডা তারো বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দু’দেশের সরকার ও জনগণকে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবেই জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারতের গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। যা সাম্প্রতিক সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আরও মজবুত হয়েছে। দুই দেশের সহযোগিতাপূর্ণ এই সম্পর্ক দিন দিন আরও সম্প্রসারিত হবে।’
রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ স্বাগত বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৩০ লাখ শহিদ, সম্ভ্রম হারানো দুই লাখ মা-বোন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও জাতীয় চার নেতাকে। ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ সাধারণ নাগরিক যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রদূত। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতার জন্য ভারতের সরকার ও সাধারণ জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় রচিত হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে চমৎকার দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্ক বিদ্যমান এবং আগামীতেও পারস্পরিক শান্তি, উন্নতি ও অগ্রগতির পথে সহযোগিতার এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’
ভারতের রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় কুমার বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বাংলাদেশ স্বাধীন করতে দুই দেশের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। রাষ্ট্রদূত ভার্মা বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্ক আজ অনেক পরিপক্ক ও গভীর। ফলে দু’দেশের অনেক জটিল ও অমিমাংসিত সমস্যা সাম্প্রতিক সময়ে সহজে ও বন্ধুত্বপূর্ণ উপায়ে সমাধান সম্ভব হয়েছে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, ১৯৭১ সালে বন্ধুত্বের যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এবং শান্তি, সমতা, গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে দুই দেশ সব সময় একযোগে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ, ভারত ও জাপানের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয় এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে দুই দেশের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও ভিডিও তথ্যচিত্র দেখানো হয়।
অনুষ্ঠানে জাপানের সংসদ সদস্য, টোকিওস্থ বিভিন্ন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ও প্রধানরা, জাপানের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ ও ভারতের জাপান প্রবাসীরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
সারাবাংলা/টিএস/পিটিএম