আবার সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছেন খালেদা জিয়া: মির্জা ফখরুল
৮ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:২৯
ঢাকা: এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আবারও সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দেশের বাইরে চিকিৎসার দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট এ মানববন্ধন আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি গতকাল গিয়েছিলাম হাসপাতালে। সেখানে তার চিকিৎসকরা ছিলেন। তিনি আবার সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছেন। তার আবারও রক্তক্ষরণ হচ্ছে। চিকিৎসকরা খুব পরিষ্কার করে বলেছেন- খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষার জন্য অতি দ্রুত বিদেশে পাঠানো দরকার।’
সরকার প্রথম থেকেই নেতিবাচক অবস্থান নিয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বাধা সৃষ্টি করছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আপনাদের মনে থাকার কথা- তিনি (খালেদা জিয়া) হেঁটে কারাগারে গিয়েছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় এবং পিজি হাসপাতালে থাকাকালীন তার চিকিৎসা না হওয়ায় আজ তিনি এমন একটা অবস্থায় চলে গেছেন। গত ২৬দিন ধরে তিনি আইসিইউতে আছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দিতে তাদের (সরকার) অনিহা কী জন্য? কারণ একটাই, তিনি এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে কথা বলেন। তিনিই হচ্ছেন একমাত্র রাজনীতিবিদ, যিনি স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে এ দেশের জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তিনিই একমাত্র রাজনীতিক, যিনি গণতন্ত্রের জন্য তার সমগ্র জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।’
অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কেন মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন। ৪০১ ধারায় তাকে সাময়িক মুক্ত দিয়েছেন। সেই ধারায় শর্ত দিয়ে রেখেছেন তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। ওই শর্তটা আপনারাই তুলতে পারেন, আর কেউ তুলতে পারবে না। ওই শর্ত তুলে নিন এবং তাকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিন।’
‘পাসপোর্ট বাতিল করেছেন। আপনারা যে কথা (চিকিৎসার ব্যাপারে সরকার ইতিবাচক) বলছেন মাঝে মধ্যে, তার সঙ্গে এটি (পাসপোর্টের আবেদন বাতিল) সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। অবিলম্বে তার পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিয়ে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে, অঘটন ঘটলে তার সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব আপনাদেরকে নিতে হবে’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘গত চৌদ্দ বছরে এই আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়ে প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে একটি একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। গণতন্ত্রের আবরণে পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছে, রাজতন্ত্র কায়েম করেছে। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর সব খাত ধ্বংস করে দিয়ে বাংলাদেশকে একটা নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। খালেদা জিয়া সুস্থ থাকলে, রাজপথে থাকলে জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেন। সেই কারণেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে তাদের এতো অনিহা।’
শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের সমন্বয়ক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, পেশাজীবী নেতা প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, কাদের গণি চৌধুরী, কৃষিবিদ শামিমুর রহমান প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম