ফেব্রুয়ারিতে বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলে পুনঃখনন শুরু
৮ ডিসেম্বর ২০২১ ২২:৫৯
ঢাকা: ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলের পুনঃখনন কাজ শুরু করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর কামরাঙ্গীরচর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন লোহারপুল এলাকায় আদি বুড়িগঙ্গা নদীপথের (চ্যানেল) ওপর সেতু নির্মাণের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন শেষে মেয়র তাপস এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, কামরাঙ্গীরচরে একটি কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে। আর তাই যাতায়ত সুবিধা নিশ্চিত করতে ভবিষ্যত কার্যক্রম মাথায় নিয়ে দুটো সেতু করতে হবে। এর মাধ্যমে মূল ঢাকার সঙ্গে সংযোগ নিশ্চিত হবে। সে লক্ষ্যে কোথায় কোথায় সেতু করা হবে, সে বিষয়গুলো সরেজমিনে দেখতে বিশেষজ্ঞ, পরিকল্পনাবিদ ও প্রধান প্রকৌশলীসহ পরিদর্শন করা হলো।
তিনি আরও বলেন, আদি বুড়িগঙ্গা নদীর অংশবিশেষ দখলমুক্ত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকেই ঢাকা জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যৌথভাবে অভিযান পরিচলনা করবে এবং আদি বুড়িগঙ্গার যে অংশ এখনও দখল অবস্থায় আছে সেগুলো দখলমুক্ত করার কার্যক্রম শুরু হবে।
মহাপরিকল্পনার আওতায় কার্যক্রমগুলো নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘প্রত্যেকটা বিষয়ে আমরা নজর দিচ্ছি। কামরাঙ্গীরচরে এই যে নদী খনন, সেতু নির্মাণ — তার সঙ্গে সঙ্গে বেড়িবাধেঁর সড়ককেও ছয় লেনে রুপান্তর করবো। দুই সারি দুই সারি — চার সারি থাকবে এক্সপ্রেসওয়ে। আর মূল সড়কের সাথে সংযোগ সৃষ্টির জন্য এক সারি এক সারি থাকবে সার্ভিস রোড। সুতরাং আমরা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ব্যবস্থা ও অন্তর্জাল সৃষ্টির কাজ হাতে নিয়েছি। এটা অনেক বড় কর্মযজ্ঞ। ধীরে ধীরে এটা দৃশ্যমান হবে। অংশ অংশ করে আমরা আগাবো। আমরা শুধু পরিকল্পনা করছি না, সাথে সাথে অ্যাকশন প্ল্যান নিচ্ছি এবং কাজেও হাত দিচ্ছি। এতে করে এক দিকে আমাদের পরিকল্পনা শেষ হবে, আরেক দিকে আমাদের কাজগুলো চলবে। পর্যায়ক্রমে আমাদের কাজগুলো দৃশ্যমান হবে।’
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিবহন বিভাগ একদম নুয়ে পড়েছিল। আমরা তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি এবং তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আমরা এরই মাঝে কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আমরা পর্যালোচনা করেছি এবং যারা যারা দোষী, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। যদিও সাময়িক অসুবিধা হবে, একটু দুর্ভোগ হতে পারে, তারপরও আমরা কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে — নিয়মিত গাড়ি চালক ছাড়া অন্য কাউকে দিয়ে আমাদের গাড়ি পরিচালনা করবো না এবং আমাদের সম্পদ, আমাদের গাড়ি কাউকে ধরতে দিবো না। এ ব্যপারে আমরা কঠোর। যারা যারা এই নিয়ম ভঙ্গ করে এগুলো করে আসছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিবো এবং ভবিষ্যতে যাতে আর এ ধরনের সুযোগ না থাকে, সে জন্য আমরা পুরো সংস্কার করছি।’
এর আগে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস নগরীর ৭১ ও ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য অন্তবর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র (এসটিএস), ধোলাইখাল জলাশয় ও মালিটোলা উদ্যান সংলগ্ন এলাকা হতে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর সিতওয়াত নাঈম, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহমদ, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলসমূহের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডসমূহের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলরবৃন্দ, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জাফর আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আশিকুর রহমান, মো. খায়রুল বাকের, মুন্সি মো. আবুল হাসেম ও কাজী মো. বোরহান উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/ইউজে/একেএম