যৌথ প্রচেষ্টায় অমীমাংসিত বিষয়ের সমাধান চান মন্ত্রী
৮ ডিসেম্বর ২০২১ ২৩:৩৪
ঢাকা: বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা বৃদ্ধির মাধ্যমে উভয় দেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলো অচিরেই সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে খুলনার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার, ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন, খুলনার ভারতীয় সহকারী হাই কমিশন, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির যৌথ আয়োজনে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে মুজিববর্ষ, মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশতজন্মবর্ষ এবং ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দুই দেশের সরকারের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু ও মহাত্মা গান্ধীর জীবন ও কর্ম নিয়ে এ প্রদর্শনী আয়োজিত হচ্ছে।
খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান, খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার, খুলনা রাজেশ কুমার রাইনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার, খুলনা বি এল কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ আতিকুজ্জামান প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। দুই দেশের কিছু অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। অভিন্ন সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও আদর্শের ক্ষেত্রে দুদেশের অনেক ভালো অবস্থান রয়েছে। এক কোটি জনগণকে আশ্রয়, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ অন্যান্য সহযোগিতার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের জনগণ অসাধারণ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। শুধু তাই নয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন রক্ষার্থে ভারতের তৎকালীন সরকার প্রধান ইন্দিরা গান্ধী বিশ্ব পরিমণ্ডলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব যতদিন থাকবে ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব কোনোভাবেই বিনষ্ট হবে না।
তিনি আরও বলেন, বন্ধুত্ব ও সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি দুদেশের কিছু অমীমাংসিত বিষয় উল্লেখ করতে হবে। তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তিসহ দুদেশের মধ্যে অন্যান্য অমীমাংসিত বিষয় অবশ্যই সমাধান হবে। ইতোমধ্যে দুদেশের স্থলসীমান্ত সমস্যা, সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত সমস্যা সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা হয়েছে।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাসের সম্পদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর ভারতবর্ষের ইতিহাসের মহানায়ক মহাত্মা গান্ধী। উভয়ের মধ্যে অসাধারণ সাদৃশ্য রয়েছে। মহাত্মা গান্ধী অহিংস আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন, দেশ মাতৃকাকে স্বাধীন-সার্বভৌম করার জন্য ভূমিকা রেখেছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে স্বাধীন-সার্বভৌম জাতিতে পরিণত করার জন্য আইনানুগ প্রক্রিয়ায় লড়াই করেছেন। জনপ্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলেছেন। অন্যথায় যার যা কিছু আছে তা নিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার কথা বলেছেন। অপরদিকে মহাত্মা গান্ধী আফ্রিকা থেকে শুরু করে সারাবিশ্বে অহিংস বাণীর কথা যেভাবে প্রচার করেছিলেন, সে দর্শন ছিল বিস্ময়কর। তাই বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনীত শুধু ছবি দেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে গভীরে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর জীবনালেখ্য জানতে হবে, বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন ও দেশপ্রেমের কথা বুঝতে হবে।
তিনি বলেন, আজ ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক একটা অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। ভারত অসাম্প্রদায়িকতা প্রাধান্য দেয়। বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম বিষয় হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতা। মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনার কথা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আজকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার সরকার একই উচ্চারণ করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে বঙ্গবন্ধুকে বিশ্ববন্ধু বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন বঙ্গবন্ধুর মতো নিপীড়িতের কণ্ঠস্বর এ উপমহাদেশের জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে।
সারাবাংলা/জিএস/একেএম