Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৯ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৪৬

প্রতীকী ছবি

ঢাকা: বড় অঙ্কের খরচ বাড়ছে আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থরবন্দর মহাসড়ক চারলেন প্রকল্পে। এক্ষেত্রে মূল ব্যয়ের তুলানায় বাড়ছে ৬২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। একইসঙ্গে বাস্তবায়নের মেয়াদও বাড়ছে তিন বছর। এজন্য প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। ভারতীয় ঋণের আওতায় (এলওসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এদিকে গত আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের আওতায় ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ১১৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। অনুমোদিত ব্যয়ের ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ। বাস্তব অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৩১ শতাংশ।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।

প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রকল্পের অধীনে আশুগঞ্জ নদীবন্দর হতে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত মোট ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে দুই পাশে ধীরগতি সম্পন্ন যানবাহনের জন্য পৃথক সাভিস লেনসহ চার লেনে উন্নীতকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় আশুগঞ্জ নদীবন্দর হতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের (এন-২) আশুগঞ্জ পর্যন্ত শূন্য দশমিক ৬৫১ কিলোমিটার মহাসড়ক (বিদ্যমান প্রস্থ-৫ দশমিক ৫ মিটার) যুক্ত আছে। এছাড়া  ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়কের (এন-২) আশুগঞ্জ হতে সরাইল পর্যন্ত ১১ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার মহাসড়ক (বিদ্যমান প্রস্থ ৭ দশমিক ৩২ মিটার)। সরাইল হতে কুমিল্লা (ময়নামতি)-ব্রাহ্মণবাড়িয়া (সরাইল) জাতীয় মহাসড়কের (এন-১০২) ধরখার পর্যন্ত ২৭ দশমিক ৫৪ কিলোমিটার মহাসড়ক এবং ধরখার হতে ধরখার-আখাউড়া জেলা মহাসড়কের আখাউড়া স্থল বন্দরের সেনারবদী পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩১৫ কিলোমিটার মহাসড়ক (বিদ্যমান প্রস্থ ৩ দশমিক ৭ মিটার) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও প্রকল্পভুক্ত মহাসড়কে ১৬টি ব্রিজ, ৩৩টি কালভার্ট, ১০টি ফুট ওভার ব্রিজ, ৩টি আন্ডারপাস ও ২টি ওভারপাস নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

ভারতসহ এ অঞ্চলের অন্যান্য প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে প্রকল্পভুক্ত মহাসড়কটির উন্নয়ন প্রয়োজন। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে বাস্তবায়িত টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্রান্স ফর সাব রিজিওনাল রোড ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের  সমীক্ষা করা হয়েছে। এর আওতায় প্রকল্পভুক্ত সড়ক নেটওয়ার্কটির প্রস্তাবিত উন্নয়নের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সম্ভাব্যতা যাচাই, ইআাইএ ও ডিজাইন করা হয়।

প্রকল্পটি মোট ৩ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় একনেক। এ সময় ২০১৭ সালের এপ্রিল হতে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়। এরপর ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই একবার মেয়াদ বাবড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। বর্তমানে প্রকল্পের কিছু নতুন অঙ্গের অন্তর্ভুক্তি, পরিমাণ ও ব্যয় হ্রাস বৃদ্ধির কারণে মোট ৫ হাজার ৭৯১ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রথম সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ব্যয় বাড়ছে ২ হাজার ২২৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৬২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এছাড়া তিন বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়ন মেয়াদ ধরা হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় মূল কার্যক্রম হচ্ছে, ভূমি অধিগ্রহণ, ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট তৈরি, রিজিড পেভমেন্ট, ড্রেন নির্মাণ, ১৬টি ব্রিজ, ২টি রেলওয়ে ওভারপাস এবং ৪টি আন্ডারপাস তেরি করা হবে। এছাড়া ৩৬টি কালভার্ট, ১০টি ফুট ওভার ব্রিজ, ৫৪ মিটার কালভার্ট, রিটেননিং ওয়াল এবং সিসি ব্লক বসানো হবে।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশীদের সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন বাস্তব অবস্থার কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দেরি হয়েছে। ব্যয়ও বাড়ানোর পেছনে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। সংশোধিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আশুগঞ্জ নদীবন্দর হতে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চারলেনের জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত হবে। ফলে বাংলাদেশ এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ বৃদ্ধি হবে। একইসঙ্গে প্রকল্প এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে। তাই প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন যোগ্য।

সারাবাংলা/জেজে/এনএস

আশুগঞ্জ-আখাউরা চারলেন প্রকল্প


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর