লালমনিরহাট: পুত্রবধূকে ধর্ষণের মামলায় শ্বশুর মোকসুদার রহমানসহ (৪৮) দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ছেলে হাবিবুর রহমান বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার উত্তর তালুক পলাশী গ্রামে গত রোববার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজ বাড়িতে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। হাবিবুর ওই গ্রামের মোকসুদার রহমানের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, উত্তর তালুক পলাশী গ্রামের মোকসুদার রহমানের ছেলে অটোচালক হাবিবুর রহমান। তিন মাস আগে প্রতিবেশি এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর থেকে শ্বশুর বাড়িতেই থাকেন ওই নববধূ। স্বামী দিনের বেলায় অটোচালাতে বাহিরে থাকেন। তার শাশুড়িও অন্যের বাড়িতে কাজে যাওয়ার সুবাদে শ্বশুর মোকসুদার রহমানসহ বাড়িতে থাকেন তিনি।
গত সপ্তাহে নববধূ জ্বরে আক্রান্ত হলে ওষুধ এনে দেন মোকসুদার রহমান। এ সময় পুত্রবধূকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করেন তিনি। পরের দিনও শ্বশুর তাকে কু প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করেন ভুক্তভোগী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুত্রবধূকে মারপিট করেন মোকসুদার। এতে চোখে আঘাত পান ওই বধূ। অবশেষে ইচ্ছা বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফায় পুত্রবধুকে ধর্ষণ করেন মোকসুদার। এভাবে সপ্তাহ ধরে লাগাতার ধর্ষণের শিকার নববধূ বিষয়টি তার স্বামী ও শাশুড়িকে জানায়।
পরে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দিনে অটোরিকশা নিয়ে বাহিরে গিয়ে কিছুক্ষণ পর বাড়ি ফিরে এসে নিজ চোখে এ অপকর্ম দেখে বাবার ওপর ক্ষিপ্ত হন ছেলে হাবিবুর রহমান। এ সময় বাবা মোকসুদার রহমানকে ধাওয়া করেও আটক করতে পারেনি তিনি।
এ ঘটনায় গত রোববার বিষয়টি নিয়ে বাবা ছেলের মাঝে পুনরায় বিতর্ক হলে নিজ বাড়িতে প্রকাশ্যে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ছেলে হাবিবুর রহমান। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা হাবিবকে উদ্ধার করে প্রথমে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
নির্যাতিত নববধূ বলেন, বাড়িতে কেউ না থাকায় প্রথম দিন ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বশুর ধর্ষণ করে। দ্বিতীয় দিন বাধা দেওয়ায় চোখে ঘুষি মেরে আহত করে ধর্ষণ করে। এভাবে ৭দিন লাগাতার ধর্ষণ করে। বিষয়টি স্বামী ও শাশুড়িকে জানিয়েছি। তারা প্রথমে বিশ্বাস করেনি। শেষ দিন স্বামী নিজেই দেখেছেন। এই ক্ষোভে স্বামী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। লম্পট শ্বশুরের বিচার দাবি করেন তিনি।
নাম প্রকাশের অনিশ্চুক একাধিক গ্রামবাসী জানান, মোকসুদার রহমান এভাবে এলাকার অনেক মেয়ের সর্বনাশ করেছেন। একাধিক গ্রাম্য বিচারে তাকে সতর্ক করা হলেও তার চরিত্রের কোনো সংশোধন হয়নি।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি তদন্ত) মোজাম্মেল হক বলেন, এ ঘটনায় মেয়ের বাবা দেলযার হোসেন ছয়জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর মধ্যে মূল আসামি মোকসুদারসহ দুজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত তাদের জামিন না মন্জুর করে কারগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ ঘটনায় বাকি আসামিদের গ্রেফতারে জোর প্রচেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক।