Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মেয়েদের ওপর সহিংসতা সবচেয়ে পীড়াদায়ক’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৩:৩৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ফাইল ছবি

ঢাকা: মেয়েদের ওপর সহিংসতা সবচেয়ে পীড়াদায়ক ঘটনায় বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নারীদের সমান অধিকার দিতে হবে এবং একসঙ্গে চলতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পদক প্রদান ও বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

বিজ্ঞাপন

এ বছর পাঁচ বিশিষ্ট নারীকে বেগম রোকেয়া পদক-২০২১ প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে নারী শিক্ষায় কুমিল্লা জেলার প্রফেসর হাসিনা জাকারিয়া বেলা, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় যশোর জেলার অর্চনা বিশ্বাস, পল্লী উন্নয়নে রোকেয়া পদক পান কুষ্টিয়া জেলার গবেষক ড. সারিয়া সুলতানা। সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ড. জিনাত হুদা এই পদক পেয়েছেন। এছাড়া নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কুমিল্লা জেলার মরহুমা শামসুন্নাহার রহমান পরাণকে মরণোত্তর রোকেয়া পদক দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে শেখ হাসিনা, প্রথমদিকে খেলাধুলার জন্য আমরা যখন প্রমিলা টিম করলাম অনেক বাধা আসল, মেয়েরা আবার কিসের জন্য ফুটবল খেলবে। এমনকি রাজশাহীর মতো জায়গায় এই প্রতিযোগিতা হতেই পারেনি। কারণ মেয়েরা খেলবে এটা তাদের পছন্দ না। যাইহোক আমাকে অন্যভাবে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। আমি যখন দ্বিতীয়বারে সরকারে আসলাম,তখন প্রাইমারি থেকে মেয়েদের স্কুল ও ছেলেদের স্কুলে প্রতিযোগিতা শুরু করে দিলাম- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা ফুটবল টিম এবং উচ্চ মাধ্যমিকে বঙ্গবন্ধু কাপ টিম। আমাদের ইসলাম ধর্মে মেয়েদের অধিকার তো দেওয়াই আছে। সেখানেই সম-অধিকারের কথা বলা আছে। তারপরও আমাদের দেশে এ ধরনের কিছু বাধা আসে, বাধা আসবে। কিন্তু সেই বাধা অতিক্রম করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

বিজ্ঞাপন

এক সময় সন্তানের পরিচয় পত্রে পাশে মায়ের নাম লেখা থাকত না- সেই আক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বেগম রোকেয়ার একটি উক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, নর-নারী উভয়েই মিলিয়ে একই বস্তু হয়। তাই একটিকে ছাড়িয়ে অপরটির উন্নতি লাভ করতে পারবে না।

এ সময় বেগম রোকেয়া সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কত গভীরভাবে তিনি চিন্তা করেছিলেন সেই যুগে, একবার ভেবে দেখেন। কাজেই আজকে বেগম রোকেয়ার দিবসে দেশের বিশিষ্ট কয়েকজন নারীকে সম্মাননা দিতে পেরে আমরা সত্যি খুব আনন্দিত। একইসঙ্গে সমাজের বিভিন্ন জায়গায় অবদান রাখা নারীদের সম্মান জানাতে বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের নামেও একটি পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন অনেকটাই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি বলে মনে করি। রংপুর তার জন্মস্থান। পায়রাবন্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেখানে তার বাড়িটি সংরক্ষণ করা হয়েছে। সেখানে মেয়েদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন কর্মসংস্থানে, বিশেষ করে গার্মেন্টস ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বেগম রোকেয়ার নামেই করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমাদের নারীরা এখন বিমান-হেলিকপ্টারও চালাচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নারীরা অত্যন্ত চমৎকারভাবে কাজ করছে। তাদের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে, এটা হলো বাস্তবতা। কাজেই সবদিক থেকেই মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে, কোনো দিকেই পিছিয়ে নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে যে জিনিসটা জন্য পীড়াদায়ক সেটা হলো- মেয়েদের ওপর সহিংসতা। যদিও আমরা আইন করে দিয়েছি। আমরা ধর্ষণ বিরোধী আইন, পারিবারিক অধিকার প্রতিষ্ঠা আইন, নারী নির্যাতন আইন করে দিয়েছি। শুধু আইন করলে হবে না, এখানে মানসিকতাটাও বদলাতে হবে। চিন্তা চেতনায় পরিবর্তন আনতে হবে এবং বিশ্বাসটা হচ্ছে সবথেকে বড় জিনিস। এই বিশ্বাসটা করতে হবে যে, নারীরা ভোগের বস্তু না। নারীরা সহযোদ্ধা- নারীরা সহযোগি। একসঙ্গে চলতে হবে, সমান অধিকার দিতে হবে। এটা হল বাস্তবতা। সেভাবেই কাজ করতে হবে।

এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ওই পাঁচ নারীকে বেগম রোকেয়া পদক তুলে দেন। এ সময় প্রত্যেককে চার লাখ টাকার চেক, রেপ্লিকাসহ একটি ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণপদক ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।

সারাবাংলা/এনআর/এনএস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম রোকেয়া দিবস বেগম রোকেয়া পদক

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর