বিমানবন্দরে মুরাদ, গন্তব্য কানাডা
৯ ডিসেম্বর ২০২১ ২১:১৩
ঢাকা: দেশ ছাড়ছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে সদ্য সাবেক হয়ে যাওয়া ডা. মুরাদ হাসান। এ উদ্দেশ্যে এরই মধ্যে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে গেছেন তিনি। জানা গেছে, কানাডাগামী একটি ফ্লাইটের টিকিট কেটেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে পৌঁছান ডা. মুরাদ। আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন (এপিবিএন) সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিমানবন্দরে কর্মরত এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক পলাশ রাত সোয়া ৯টায় সারাবাংলাকে বলেন, ডা. মুরাদ হাসান এই মুহূর্তে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে অবস্থান করছেন। রাত ১১টা ২০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি কানডার পথে রওনা দেবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, ডা. মুরাদের নামে কোনো মামলা নেই। তার দেশত্যাগেও কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই। ফলে তিনি দেশত্যাগ করতে চাইলে বাধা দেওয়ার কিছু নেই।
আরও পড়ুন-
- মুরাদ হাসান এখন সাবেক
- মুরাদের পদত্যাগপত্রেও বড় ভুল
- প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে মুরাদের পদত্যাগ
- জেলা কমিটি থেকেও অব্যাহতি মুরাদকে
- ফেসবুক স্ট্যাটাসে ক্ষমা চাইলেন ডা. মুরাদ
- মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ
সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে পলাতক তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য এবং চিত্রনায়ক ইমন ও চিত্রনায়িকা মাহির সঙ্গে একটি ফোনালাপ ফাঁসের সূত্র ধরে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ডা. মুরাদ হাসান।
জাইমা রহমানকে নিয়ে ডা. মুরাদের মন্তব্যকে অভব্য, শিষ্টাচার বহির্ভূত, নারীবিদ্বেষী, কুরুচিপূর্ণ বলে অভিহিত করেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীও। অন্যদিকে ইমন ও মাহির সঙ্গে ফোনালাপে মাহিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে তাকে তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়াসহ যৌন সহিংস কথাবার্তাও বলতে শোনা যায় ডা. মুরাদকে।
এরপর ডা. মুরাদের আরও কিছু অডিও-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এসব অডিও-ভিডিওতে তাকে অশ্লীল কথাবার্তা বলতে এবং অসংলগ্ন আচরণ করতে দেখা যায়। নারী অধিকারকর্মীসহ রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রীর প্রতি। এসব বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগও চাওয়া হয়।
বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর সোমবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। সোমবার রাত ৮টায় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশ ডা. মুরাদকে অবহিত করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিজ দফতরে পদত্যাগপত্র জমা দেন ডা. মুরাদ। বিকেল ৩টার দিকে তার পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পৌঁছে দেওয়া হয়। রাত ১১টার দিকে পদত্যাগপত্রটি রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন বলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে।
এদিকে, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদেও ছিলেন জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুরাদ হাসান। মঙ্গলবার বিকেলে জেলা কমিটির এক জরুরি বৈঠক থেকে তাকে সেই পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির পরবর্তী বৈঠকে মুরাদ হাসানকে দল থেকেও স্থায়ী বহিষ্কারের বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর
ডা. মুরাদ ডা. মুরাদ হাসান তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী