Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিউজিল্যান্ডে নিষিদ্ধ হবে সিগারেট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৯ ডিসেম্বর ২০২১ ২৩:৩৭

ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচাতে সিগারেট বিক্রি নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। এ লক্ষ্যে দেশটি নতুন এই আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। এই আইন পাস হলে দেশটিতে ২০০৮ সালের পর জন্ম নেওয়া কোনো নাগরিক কখনো সিগারেট কিনতে পারবে না।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ধূমপান একেবারেই বন্ধ করতে এমন সিদ্ধান্তের পথে হাঁটছে নিউজিল্যান্ড। এ সংক্রান্ত নতুন আইনটি আগামী বছর পাস হওয়ার কথা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. আয়েশা ভেরাল বলেন, আমরা নিশ্চিত করতে চাই— তরুণ প্রজন্ম ধূমপান শুরুই করতে পারবে না। আর তারা ধূমপান শুরু করতে না পারলে একটা সময় ধূমপানমুক্ত হবে নিউজিল্যান্ড।

বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ধূমপানের বিরুদ্ধে তাদের কঠোরতম অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে তারা নতুন আইনের পথে হাঁটছে।

চিকিৎসকসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এটিকে তারা গোটা বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্তমূলক সংস্কার পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তারা বলছেন, এটি তামাকপ্রাপ্তির সুযোগ ব্যাপকভাবে কমিয়ে দেবে এবং সিগারেটে নিকোটিনের মাত্রাকেও কমিয়ে দেবে।

ইউনিভার্সিটি অব ওটাগোর অধ্যাপক জ্যানেট হুক বলেন, এটি জনগণকে ধূমপান বন্ধ করতে অথবা আরও কম ক্ষতিকর পণ্য বেছে নিতে সহায়তা করবে। এতে করে তরুণদের মধ্যে নিকোটিনের আসক্তি গড়ে ওঠার সুযোগ পাবে না।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা স্বাগত জানালেও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছ থেকে ধূমপানবিরোধী এমন কঠোর অবস্থান নিয়ে এসেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এক ব্যক্তি যেমন রয়টার্সকে বলেছেন, আমার মনে হয় এটি একটি ভালো উদ্যোগ। কারণ এখন কিশোরদের অনেককেই প্রকাশ্যে ধূমপান করতে দেখা যায়। জনমনে প্রশ্ন রয়েছে, তাদের হাতে সিগারেট যাচ্ছে কীভাবে। এছাড়াও এই উদ্যোগ আমার জন্যও ভালো। কেননা সিগারেট কিনতে না পারলে পকেটের টাকারও সাশ্রয় হবে।

বিজ্ঞাপন

তবে অনেকেরই আশঙ্কা, কিউই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এমন কঠোর অবস্থান সিগারেটসহ তামাকপণ্যের কালোবাজার রমরমা হয়ে উঠবে। ডেইরি অ্যান্ড বিজনেস ওনারস গ্রুপের চেয়ারম্যান সানি কৌশল যেমন বলছেন, এটি শতভাগ গ্রন্থগত চিন্তা, যার মধ্যে এক শতাংশ সারবত্তাও নেই। এর ফলে অপরাধ প্রবণতা বাড়বে। গুণ্ডা আর অপরাধীরা সিগারেটশূন্য বাজারের অভাব পূরণ করে দেবে।

কালোবাজারের বিষয়টি অবশ্য নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবেচনাতেও রয়েছে। তারা বলছে, সীমান্ত পেরিয়ে যেন সিগারেট ও তামাকপণ্য আসতে না পারে, সে কারণে কাস্টমসকে আরও বেশি জনবল নিয়োগ দিতে হবে।

নিউজিল্যান্ডে বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ১৩ শতাংশ ধূমপায়ী। আদিবাসী মাউরি জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই হার আরও বেশি— প্রায় ৩৩ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে ধূমপায়ীর সংখ্যা ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য, ধূমপায়ীর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দেশটিতে ক্যানসারে আক্রান্তের এক-চতুর্থাংশের পেছনে কারণ ধূমপান। প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর মধ্যে শীর্ষ কারণও এটি। যে কারণে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নিউজিল্যান্ডের সংসদ সদস্যরা ধূমপায়ীদের পরিমাণ কমিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার কিউই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ করে জানিয়েছে, দেশটিতে সিগারেট বিক্রির স্থান উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়ে আনবে। সুপারমার্কেট ও কর্নার স্টোরগুলোতে সিগারেট বিক্রি নিষিদ্ধই করে দেওয়া হবে। বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ৮ হাজার দোকানের সিগারেট বিক্রির অনুমোদন থাকলেও এই সংখ্যা ৫শতে নামিয়ে আনা হবে।

সারাবাংলা/টিআর

নিউজিল্যান্ড সিগারেট নিষিদ্ধ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

শরৎ বাংলাদেশের কোমল স্নিগ্ধ এক ঋতু
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৪

সম্পর্কিত খবর