Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রিকশা শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত লাইসেন্সের দাবি

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
১০ ডিসেম্বর ২০২১ ১৪:২৩

রিকশা শ্রমিকদের পর্যাপ্ত পরিমাণ লাইসেন্স দেওয়া, টোকেন নম্বরের মাধ্যমে রিকশা শ্রমিকদের কষ্টার্জিত অর্থ আত্মসাৎ বন্ধ করাসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এছাড়া রিকশা শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিতের দাবি জানান তারা।

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস্) উদ্যোগে আয়োজিত এক মানবন্ধনে তারা এসব দাবি জানান।

বিজ্ঞাপন

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস ২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত এই মানবন্ধনে শতাধিক রিকশা শ্রমিক, জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন নেতাম যুব নেতা, রিকশা শ্রমিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মানবন্ধনে বিলস পরিচালক কোহিনুর মাহমুদ বলেন, আজ থেকে ৭৩ বছর আগে ১৯৪৮ সালে প্রথম মানবাধিকার দিবসের সূচনা হয়েছিল। কিন্তু এখনো সব মানুষের মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষিত হয়নি।

করোনাকালে রিকশা শ্রমিকদের জীবন সবচেয়ে বেশি দুর্দশাগ্রস্ত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আজ রিকশা শ্রমিকদের জন্য মাঠে নেমেছি। আমরা দেখেছি, শ্রমজীবী মানুষ দুর্দশায় আছে। বিশেষত রিকশাচালক ভাইয়েরা। করোনার সময় ২০২০ সালে যখন সরকার লকডাউন ঘোষণা করে, তখন সবচেয়ে বেশি দুর্দশায় ছিলেন তারা। এই রিকশাচালকদের জন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তারা রাস্তায় বের হতে পারেননি, পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন পার করেছেন।

রাস্তাঘাটে রিকশা চালকদের প্রতি অন্যায় আচরণ ও তাদের নাজেহাল করা বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কোহিনুর মাহমুদ।

তিনি বলেন, রিকশাচালকদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাদের আয়ের সুরক্ষা দিতে হবে। তাদের সন্তান-সন্ততিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। রাস্তাঘাটে তাদের যে হয়রানি করা হয়, চড়থাপ্পড় মারা হয়, নাজেহাল করা হয়— এসব বন্ধ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

মানবন্ধনে জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নঈমুল হাসান জুয়েল বলেন, জাতিসংঘের সনদের মাধ্যমে সারাবিশ্বে মানবাধিকার দিবস পালিত হচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে যারা রিকশা চালান, তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ঢাকা শহর বর্ধিত হয়েছে, মানুষের বসবাস বেড়েছে, কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ লাইসেন্স রিকশাচালকদের দেওয়া হয়নি। ঢাকা শহরের রিকশাচালকেরা যারা দিন আনে দিন খায়, পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে থাকতে চায়, আজ তাদের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে।

এসময় তিনি রিকশাচালকদের জন্য পর্যাপ্ত লাইসেন্সের ব্যবস্থা করে সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি জানান। তিনি বলেন, গুলশান-বনানী-উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় সমিতির নামে রিকশাচালকদের সঙ্গে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। এসব চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। একজন রিকশাচালক সারাদিন কষ্ট করে যে অর্থ উপার্জন করেন, বিভিন্ন সমিতি এর অর্ধেকটা নিয়ে নেয় নম্বর-টোকেন-গেঞ্জিসহ বিভিন্ন পন্থায়। তারা রিকশাচালকদের টাকা আত্মসাৎ করে নিচ্ছে।

জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কামরুল আহসান বলেন, আজ সামজিক বৈষম্যের জায়গা এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে, এতে আমাদের সবার জীবন কাহিল। বিশেষত রিকশাচালকদের অবস্থা। করোনাকালে কত সহায়তার কথা শুনেছি, রিকশাচালকদের ভাগে এই সহায়তা কতটুকু গিয়েছে? আমরা সেটা হারিকেন দিয়ে খুঁজেও পাব না।

তিনি বলেন, আজ আমাদের দাবি থাকবে যেন সারাদেশের সব শ্রমিককে ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারে আনা হয়, তাদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয় এবং তাদের আইনের অন্তর্ভুক্ত যেন করা হয়।

মানববন্ধন শেষে রিকশা শ্রমিকদের অংশগ্রহণে একটি র‌্যালি বের করেন তারা। র‌্যালিটি শাহবাগ জাতীয় জাদুঘর এর সামনে থেকে শুরু হয়ে কদম ফোয়ারায় (হাইকোর্ট মোড়) গিয়ে শেষ হয়।

সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর

বিলস মানবাধিকার দিবস রিকশা শ্রমিকদের সুরক্ষা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর