Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমরা আইনভঙ্গকারী জাতিতে পরিণত হয়েছি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১১ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:২০

ঢাকা: আমরা আইন ভঙ্গকারী জাতিতে পরিণত হয়েছি। এক সময় হাইড্রোলিক হর্ন খুলে ফেলা হয়েছিল, এখন আবার চালু হয়েছে। এটা কিভাবে চালু হয়েছে, সেটি আবার দেখতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, রাতের বেলায় রাস্তায় কোনো গাড়ি নেই, অ্যাম্বুলেন্স হর্ন বাজিয়ে ছুটে চলছে। রাস্তায় আইন ভাঙার প্রবণতা কমাতে না পারলে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে নিসচার পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০টি পরিবারকে সেলাই মেশিন দেওয়া হয়।

নিসচার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম, বিআরটিএ এর সাবেক চেয়ারম্যান ম. আ. হামিদ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই একটি সড়ক দুর্ঘটনাতেও যেন মানুষ না মারা যায়। সরকারও সেভাবে কাজ করছে। কিন্তু মহামারি ক্যানসার প্রভৃতি রোগে যে সংখ্যক মানুষ মারা যায় তার চেয়েও সড়ক দুর্ঘটনায় বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে। ১৫ থেকে ২০ বছর আগে যদি ফিরে দেখেন ঢাকা-আরিচা সড়ক যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছিল। ২০০৮ সালে সরকার গঠনের পর সেখানে যাতায়াতের সময় সে দুর্ঘটনা তেমন দেখি না। মূলত রাস্তা উন্নত করার কারণে দুর্ঘটনা কমে এসেছে। তবে শুধুই যে সড়ক বা চালকের জন্য দুর্ঘটনা ঘটে তাও কিন্তু নয়।

তিনি বলেন, বিদেশে ২০ শতাংশ সড়ক আছে। কিন্তু আমরা নিজেদের দেশে সেটিকে ৮ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে আনতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী যাতায়াত নিরবচ্ছিন্ন করতে এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে, ফ্লাইওভার, ব্রিজ প্রভৃতি নির্মাণ করে চলেছেন। জার্মানিতে দেখেছি, আড়াই’শ কিলোমিটার গতিতেও গাড়ি চলেছে। কিন্তু সেটা আমরা চিন্তা করতে পারছি না, আমাদের জনসংখ্যা ১৭ কোটি।

বিজ্ঞাপন

দুর্ঘটনা রোধে নিসচার ১১১টি সুপারিশের প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিসচা ১১১টি সুপারিশ করেছে। সেটির দায়িত্ব আবার আমার উপর পড়েছে। এসব দাবির বিষয় নিয়ে মিটিং করেছি। এগুলো এক বছর বা দুই বছরে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। কিছু দাবি ৫ বছরে বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে। তাই এসব দাবি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের সব মহাসড়কে ট্রাক বে ও বাস বে চালু করা হবে। এরইমধ্যে মাওয়া সড়কে বাস বে ও ট্রাক বে চালু হয়েছে। অন্যান্য সড়কেও চালু হবে।

তিনি আরও বলেন, ড্রাইভার একটানা কতক্ষণ গাড়ি চালাতে পারবে তা নির্ধারণ করা জরুরি। ড্রাইভারদেরও বলতে হবে আমি ৬ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে ফেলেছি, আমাকে আর দায়িত্ব দেবেন না।

সভাপতির বক্তব্যে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, যারা বলেন শুধু আইন দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলব—আইন ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়। আইনের বিষয়টি সবাইকে জানাতে হবে। আইন অনুযায়ী সবাইকে সচেতন করতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে অনেক সংগঠন এগিয়ে এসেছে। ২৮ বছর আগে যখন শুরু করেছিলাম, তখন অনেকেই আমাকে বলেছে বউ হারিয়ে আমি পাগল হয়ে গেছি। এখন মানুষ বুঝতে পারছে নিরাপদ সড়ক তার অধিকার। চালকরা আমাদের ভাই। তাদের জীবন মানের উন্নয়ন না হলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। তারা নিজের জীবন ভালো না বাসলে অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারবে না।

সারাবাংলা/ইএইচটি/আইই

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর