সিআরপি’র প্রতিষ্ঠাতা ভ্যালরি টেইলরকে কুর্নিশ বিপ্লব বড়ুয়ার
১২ ডিসেম্বর ২০২১ ০০:০৭
ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেছেন, ‘আমি রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসেবে সিআরপির প্রতিষ্ঠাতা ভ্যালরি টেইলরকে কুর্নিশ জানাই, সালাম জানাই।’
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে সাভারে সেন্টার ফর দি রিহ্যাবিলিটেশন অফ দি প্যারালাইজডের (সিআরপি) ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সেবার ৪২ বছর অতিক্রম উপলক্ষে সিআরপি হেড অফিস সাভারে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ভ্যালরি টেইলরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিশেষ অতিথি হিসাবে চ্যানেল আই প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিদ মজুমদার বাবু, জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, সিআরপি’র নির্বাহী পরিচালক ড. মো. সোহবার হোসেন।
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘প্রতিবছর এই সিআরপি থেকে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ সেবা পাচ্ছে। আবার এখান থেকে যারা স্কিল, এই বিদ্যা, এই ট্রেনিং নিয়ে যাচ্ছে তারাও হাজার হাজার মানুষের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।’
সিআরপি’র প্রতিষ্ঠাতা ভ্যালেরি টেইলর সম্পর্কে সংগ্রামী জীবন তুলে ধরে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘তিনি তার জীবনের শুরুতে বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার বেদনা দেখে তিনি যে কাজ শুরু করেছিলেন, যে আলো তিনি জ্বালিয়েছেন এই আলো আজকে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পৌঁছেছে। আমি রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে, আমি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসেবে তাকে কুর্নিশ জানাই,আমি সালাম জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানের গল্প অনেকবার শুনেছি। ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার সরকারের প্রথম মেয়াদে মিসেস ভ্যালরিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিয়েছেন। কারণ তিনি জীবনের সবকিছু এই দেশের মানুষের সেবায়, দেশের প্রতিবন্ধী-পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষের সেবায় বিলিয়ে দিয়েছেন। তাই তাকে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী পরম মমতায় এই রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব প্রদান করে সম্মান দিয়েছেন এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতা পদক দিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিজেও তিনি কয়েকবার এই প্রতিষ্ঠানে এসেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) এই প্রতিষ্ঠানে এসে তার পরিবারের সদস্যদের জন্মদিন পর্যন্ত পালন করেছেন। ২০০০ সালে যখন করোনা মহামারি, যখন আমরা ঘরবন্দি তখন আমাকে একদিন এই প্রতিষ্ঠান থেকে টেলিফোন করা হয়েছিল। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করার পর তিনি আমাকে দ্রুত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা পিপিপিসহ পরবর্তীতে ১০ কোটি টাকা অনুদান দিতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।’
আমি অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি, অত্যন্ত আনন্দ বোধ করছি, গৌরব বোধ করছি আজ এই প্রতিষ্ঠানে আসতে পেরে। এই প্রতিষ্ঠানের ৪২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উপস্থিত থাকতে পেরে, বলেন বিপ্লব বড়ুয়া।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে একজন ব্রিটিশ ফিজিওথেরাপিস্ট ভ্যালেরি টেইলর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের দুটি পরিত্যক্ত সিমেন্ট গো-ডাউনে মাত্র চারজন মেরুরজ্জুর আঘাতপ্রাপ্ত পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী নিয়ে সিআরপি’র যাত্রা শুরু করেন। দীর্ঘ ৪২ বছর যাবৎ কঠোর পরিশ্রম ও নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টার মাধ্যমে সিআরপি বজ বর্তমান অবস্থা পৌঁছেছে। সিআরপির প্রতিষ্ঠাতা যুক্তরাজ্যে তার আরাম-আয়েশের জীবন ত্যাগ করে বাংলাদেশের এই অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।
৪২ বছরের এই যাত্রায় সিআরপি’র হেড অফিস ব্যতীত সারাদেশে প্রায় ১১টি শাখার বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। সিআরপি প্রতিবছর প্রায় ৮০ হাজার রোগীকে সেবা দিয়ে আসছে এবং এই সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সারাবাংলা/এনআর/এমও