‘৭-১০ দিনের মধ্যে বুস্টার ডোজ শুরু করা সম্ভব হবে’
১২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৪:১২
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে বুস্টার ডোজ শুরুর জন্য কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশের অপেক্ষায় রয়েছি। একইসঙ্গে সুরক্ষা অ্যাপ আপডেট করার কাজ চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে বুস্টার ডোজের কার্যক্রম ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে শুরু করা সম্ভব হবে।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় রাজধানীর শ্যামলীর শিশু হাসপাতালে ভিটামিন-এ টিকা ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। দ্রুততম সময়ে সবাইকেই ভ্যাকসিন নিতে হবে। করোনায় সংক্রমিত হলে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে। এজন্য এই বয়সী জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে। শিগগির ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিদের বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করব।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বয়স্কদের বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশেও বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে বুস্টার ডোজের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ষাটোর্ধ্ব ও ফ্রন্টলাইনারদের বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে। তাদের তালিকা তৈরির কার্যক্রম চলছে।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, দেশে দুই নারী ক্রিকেটারের দেহে এটি শনাক্ত হয়েছে। তারা জিম্বাবুয়েতে খেলতে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। তাদের সংস্পর্শে যারা ছিল তাদের সবারই নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ওমিক্রন ঠেকাতে সব প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। বাড়ানো হয়েছে স্ক্রিনিং।
তিনি বলেন, ওমিক্রন ভাইরাসটি খুবই সংক্রামক এবং দ্রুত ছড়িয়ে যায়। কিন্তু এর উপসর্গ মৃদু। এখনও কোনো মৃত্যু সংবাদ আমরা পাইনি। এটা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি ক্ষতিকারক নয়। উপসর্গ একইরকম। আমাদের দুই নারী ক্রিকেটার কোয়ারেনটাইনে আছেন। তারা ভালো আছেন। নিয়মিত তাদের চেকআপ চলছে। আশা করছি, তারা দুজনই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।
জিম্বাবুয়ে ফেরত বাংলাদেশি দুই নারী ক্রিকেটারের সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন তাদের শনাক্ত করে হয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, জিম্বাবুয়ে থেকে আসা আমাদের দুই নারী ক্রিকেটার; যাদের শরীরে ওমিক্রন ভাইরাস পাওয়া গেছে, তাদের আমরা কোয়ারেনটাইনে রেখেছি এবং তারা সুস্থ আছে। তাদের যা যা চিকিৎসা দরকার সেগুলো ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঝে মাঝেই পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে কী অবস্থায় আছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে হয়তো কিছু দিন সময় লাগবে। অন্তত ২ সপ্তাহ লাগবে। পুরোপুরি যখন সেরে উঠবে তখনই আমরা তাদের ছাড়তে পারবো।
তিনি বলেন, ওমিক্রনে আক্রান্তদের সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। আমরা কন্টাক্ট ট্রেসিং করছি, সবাইকে পরীক্ষার আওতায় এনেছি। যারা সঙ্গে ছিল বা সংস্পর্শে এসেছে, সবার পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারও কোনও ধরনের জটিল উপসর্গ নেই।
তিনি আরও বলেন, দেশের বাইরে থেকে যারা আসবেন তাদের সবাইকে আরও সতর্ক হতে হবে। এয়ারপোর্টে আমরা আরও জোরদার স্কিনিং করেছি। বর্ডারগুলোতেও আমরা স্কিনিং জোরদার করেছি। আফ্রিকার থেকে যারা দেশে আসবেন, তাদেরকে বাধ্যতামূলক কোয়ারেনটাইনে থাকার জন্য ব্যবস্থা করেছি। আফ্রিকার বাইরে ৬২টা দেশে এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে এই ওমিক্রন ভাইরাস।
সবাইকে ভ্যাকসিন নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডব্লিউএইচও বলেছে— আমরা যে ভ্যাকসিন ব্যবহার করছি সেগুলো ওমিক্রন দমনে কিছুটা কাজ করে। যেসব ভ্যাকসিন আমরা ব্যবহার করছি, সেগুলোর প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। সে জন্য আমরা চাইবো, যারা এখনও ভ্যাকসিন নেয়নি তারা তাড়াতাড়ি যেন দ্রুত নিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, আমরা প্রায় ৭ কোটির মতো ভ্যাকসিন দিয়েছি। দ্বিতীয় ডোজ ৪ কোটির মতো হয়েছে। ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য আগে যে আগ্রহ ছিল, আমরা দেখছি এখন ভাটা পড়েছে। যারা ভ্যাকসিন নিচ্ছে তারা কিন্তু তেমন অসুস্থ হচ্ছে না। আমাদের হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কম, মৃত্যুর সংখ্যা খুবই কম। দুদিন আগে শূন্য ছিল, গতকাল ১ ছিল। ভ্যাকসিন ব্যবস্থার ফলেই এ পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে।
সারাবাংলা/এসবি
ওমিক্রন জাহিদ মালেক বুস্টার ডোজ ভিটামিন ‘এ’ ক্যাম্পেইন ভ্যাকসিন শিশু হাসপাতাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী