Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাজা বাতিল, বেকসুর খালাস পেলেন রনি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১২ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:৪৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে আলোচিত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনির বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া দুই বছরের সাজা বাতিল হয়েছে। এর ফলে সাড়ে পাঁচ বছর আগের ওই সাজা থেকে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।

রোববার (১২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফারজানা আকতার আসামি নুরুল আজিম রনির দাখিল করা আপিল মঞ্জুর করে তাকে সাজা থেকে অব্যাহতি দেন।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অতিরিক্ত জেলা পিপি মো. নাসির উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তৎকালীন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুনুর রশীদের পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত নুরুল আজিম রনিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। আসামি ওই রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করেছিলেন। আদালত আপিল মঞ্জুর করে সাজা অবৈধ ঘোষণা করে খারিজ করে দিয়েছেন। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কারাদণ্ডের আদেশে ব্যত্যয় নিয়ে আদালত রায় ঘোষণার সময় কিছু উল্লেখ করেননি। পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’

চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ও মহসীন কলেজ শিবিরমুক্ত করা এবং শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংকটে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তুমুল আলোচিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি। এর মধ্যে ২০১৬ সালের ৭ মে তিনি ভিন্নভাবে আবারও আলোচনায় আসেন। চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে নির্বাচন চলাকালে একটি ভোটকেন্দ্রের কাছ থেকে তাকে অস্ত্র, গুলি ও ব্যালট পেপারসহ আটকের তথ্য দেয় বিজিবি। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে দেওয়া সাজার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন। ২০১৬ সালের ৩০ জুন নুরুল আজিম রনি জামিনে মুক্তি পান।

বিজ্ঞাপন

জামিনে বেরিয়ে নুরুল আজিম রনি আদালতে সাজা বাতিলের আপিল করেন। গত ৭ ডিসেম্বর ওই আপিল আবেদনের ওপর শুনানি হয়েছে।

নুরুল আজিম রনির আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আপিল আবেদনের শুনানিতে আমরা আদালতে বলেছি- সংক্ষিপ্ত আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, আসামি দোষ স্বীকার করেছেন। কিন্তু আইনে বলা হয়েছে, আসমি যদি দোষ স্বীকার করে থাকেন সেটা আলাদাভাবে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক পত্রে লিপিবদ্ধ হতে হবে এবং উপস্থিত দু’জন সাক্ষীর স্বাক্ষর থাকতে হবে। রনিকে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক সাজা দেওয়া হলেও আলাদা পত্রে সেটা লিপিবদ্ধ ছিল না, যা মোবাইল কোর্ট আইনের ৭ ধারা ও ফৌজদারি কার্যবিধির চূড়ান্ত লঙ্ঘন। এত বড় ত্রুটি নিয়ে এই সাজা বহাল থাকতে পারে না।’

‘এরপর রাষ্ট্রপক্ষের পিপি আসামি ও প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরসহ একটি দোষ স্বীকারোক্তিমূলক পত্র উপস্থাপন করেছিলেন। কিন্তু আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছি যে, আসামির স্বাক্ষরটা জাল ছিল। কারণ সেখানে কোনো তারিখ ছিল না। আমার মক্কেল বলেছেন, তিনি এ ধরনের কোনো পত্রে স্বাক্ষর করেননি। এছাড়া সাক্ষী হিসেবে প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরে কোনো ভোটার নম্বর ছিল না। এটি একটি জাল দোষ স্বীকারোক্তিপত্র বলে আমরা আদালতের কাছে উপস্থাপন করেছি। আদালত আমাদের বক্তব্য আমলে নিয়ে আপিল মঞ্জুর করে সাজা খারিজ করে রনিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন’— বলেন ইফতেখার সাইমুল

ওই ঘটনার দুই বছরের মাথায় ২০১৮ সালের এপ্রিলে নগরীর একটি কোচিং সেন্টারের মালিককে রনির মারধরের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মুখে ছাত্রলীগের পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন নুরুল আজিম রনি।

সারাবাংলা/আরডি/একে

ইউনিয়ন পরিষদ নুরুল আজিম রনি রনি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর