পুলিশ পরিদর্শকের ঘরের হ্যাজবোল্ট কেটে টাকা-অলংকার চুরি
১২ ডিসেম্বর ২০২১ ২২:৩৩
রাজবাড়ী: রাজবাড়ীতে এক পুলিশ পরিদর্শকের বাড়ির ঘরের দরজার হ্যাজবোল্ট কেটে ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা ও সোনার অলংকার চুরির ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের বড় ভবানীপুর গ্রামের পুলিশ পরিদর্শক মো. আহাদ মিয়ার বাড়িতে চুরির এ ঘটনা ঘটে।
আহাদ মিয়া বরিশাল জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) হিসেবে কর্মরত। তার আরও দুই ভাই পুলিশ বাহিনীতে পরিদর্শক পদে চাকরি করছেন। তারা হলেন— গাজীপুর জেলা পুলিশে কর্মরত আনোয়ার হোসেন মিয়া ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুরের অলি মিয়া।
পরিদর্শক মো. আহাদ মিয়া জানান, তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বরিশালে তার কর্মস্থলে থাকেন। বাড়িতে তার এক ভাই মামুন মিয়া পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। ফলে তাদের বাড়ি অনেকটা ফাঁকা থাকে।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) সকালে তার ভাই মামুন মিয়া ফোন করেন আহাদ মিয়াকে। তিনি জানান, তার ঘরের দরজার হ্যাজবোল্ট কেটে ভেতরে ঢুকে চোরেরা নগদ ৪৫ হাজার টাকা ও দুইটি সোনার চেনসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে।
চুরির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে আহাদ মিয়া বলেন, আমরা তিন ভাই পুলিশে চাকরি করি। আমাদের বাড়িতেই যদি এভাবে চুরি হয়, তাহলে এলাকার সাধারণ মানুষ কীভাবে স্বস্তিতে থাকবে? এলাকার অনেকেই আমাকে ফোন করে চুরির আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন। আমি রাজবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন করে আমাদের এলাকায় পুলিশি নিরাপত্তা জোরদারের জন্য অনুরোধ করেছি। একইসঙ্গে আমার চুরি হওয়া টাকা ও সোনার অলংকার উদ্ধারের দাবিও জানিয়েছি।
আহাদ মিয়ার ভাই মামুন মিয়া বলেন, শনিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। রোববার সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পাই, আহাদের ঘরের দরজার হ্যাজবোল্ট কাটা এবং দরজা খোলা। ঘরে ঢুকে দেখি ওয়্যারড্রব ও ট্রাংক খোলা এবং ঘরের সবকিছু তছনছ করা। তখন সবকিছু তল্লাশি করে দেখি, ওয়্যারড্রবের বেতর থেকে নগদ টাকা ও ট্রাংকের ভেতর থেকে সোনার দুইটি চেনসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একই রাতে আমাদের প্রতিবেশী দরিদ্র কৃষক আকরাম মোল্লার ঘরেও চুরি হয়েছে।
কৃষক আকরাম মোল্লা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তারা পরিবারের সবাই গ্রামের একটি বাড়িত গাজীর গান শুনতে যান। রাত ১টার দিকে তারা বাড়ি ফিরে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। এরপর ভেতরে ঢুকে ঘরের সবকিছু এলোমেলো দেখতে পেয়ে তল্লাশি করে দেখেন চোরেরা নগদ ১২ হাজার টাকা, একটি সোনার আংটি, একটি রুপার চেন ও একটি ব্রেসলেট চুরি করে নিয়ে গেছে।
চুরি হওয়া নগদ ১২ হাজার টাকা অন্তঃস্বত্ত্বা মেয়ের সিজার করার জন্য জমিয়ে রেখেছিলেন বলে জানান কৃষক আকরাম মোল্লা। তার টাকা ও গহনা উদ্ধারের জন্য পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
রাজবাড়ী সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও বসন্তপুর ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিট অফিসার মো. মেজবা উদ্দিন বলেন, আমি বাড়ি দু’টি পরিদর্শন করেছি। ঘটনার সময় বাড়ি দু’টি ফাঁকা ছিল। চোরকে গ্রেফতারের পাশাপাশি চুরি হওয়া টাকা ও সোনার অলংকার উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
সারাবাংলা/টিআর