Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বন্দি নির্যাতন: চট্টগ্রামে ৫ কারা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:৪২

ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত বন্দিকে নির্যাতনের অভিযোগে একটি মামলার আবেদন মহানগর হাকিম আদালত খারিজ করে দেওয়ার পর দায়রা জজ আদালতে সেটি দায়ের করা হয়েছে। দায়রা জজ আদালত মামলাটি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন। মামলায় জেল সুপার, জেলারসহ পাঁচ কারা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সাজাপ্রাপ্ত বন্দির স্ত্রী ফটিকছড়ি উপজেলার বাসিন্দা পারভিন আক্তার হিরা।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সরওয়ার জাহানের আদালতে পারভিন আক্তার হিরা মামলার আবেদন করেছিলেন। ৩০ নভেম্বর শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন। এরপর বাদি মহানগর দায়রা জজ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন— চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম, জেলার দেওয়ান তারিকুল ইসলাম, ডেপুটি জেলার মো. সাইমুর, কারারক্ষী সবুজ দাশ এবং সুবেদার মো. এমদাদ হোসেন।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে একটি মামলার আবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছিল। আদালত সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডিকে আদেশ দিয়েছেন।’

আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাদি পারভিন আক্তারের স্বামী মো. শামীম সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে ২০০৪ সাল থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে আছেন। চলতি বছরের ১৭ জুলাই পর্যন্ত তিনি কারাগারের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে অর্থাৎ হাসপাতালে ছিলেন। তিনি শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত। অভিযুক্তরা কারা অভ্যন্তরে বিভিন্ন সময় তাকে শারীরিকভাবে নাজেহাল ও মারধর করেন।

বিজ্ঞাপন

সঠিক সময়ে খাবার না দেওয়ার প্রতিবাদ করায় গত ১২ জুলাই জেলার তারিকুল বন্দি শামীমকে বেধড়ক মারধর করেন। এরপর ১৭ জুলাই ভোরে এমদাদ, সবুজ ও সাইমুর গিয়ে তাকে কারা অভ্যন্তরে একটি আমগাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। এরপর তাকে জেলারের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন জেলার তারিকুল বলেন— শালা এখনো মরে নাই, মরলে এক কলম লিখে দেব, কিছুই হবে না। একথা বলে জেলারও আবার শামীমকে মারধর করেন। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে শামীমকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার আবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত ২২ আগস্ট কুমিল্লা কারাগার থেকে বন্দি শামীম টেলিফোনে শামীমের স্ত্রীকে বিষয়টি জানান। এরপর স্ত্রী পারভিন ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। গত ১১ নভেম্বর শামীমকে পৃথক দু’টি মামলায় আদালতে হাজিরা দেওয়ার জন্য নিলে তিনি বিষয়টি স্ত্রীকে সরাসরি খুলে বলেন। এরপর পারভিন মামলা দায়েরের উদ্যোগ নেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার দেওয়ান তারিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘শামীম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামি ছিলেন। হাইকোর্টের রায়ে সম্প্রতি সেটা কমে যাবজ্জীবন হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও ৯টি মামলা বিচারাধীন আছে। সে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম কারাগারে ছিল। তার নির্যাতনে অন্যান্য বন্দিরা অতীষ্ঠ। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে কুমিল্লা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। কুমিল্লা কারাগার থেকে আবারও চট্টগ্রাম কারাগারে ফেরার জন্য সে নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। তার অভিযোগের বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই।’

সারাবাংলা/আরডি/এনএস

চট্টগ্রাম কারাগারে মৃত্যু বন্দি নির্যাতন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর