ডা. মুরাদকে গালি দেওয়ার ৬ দিন পর ক্ষমা চাইলেন ইশরাক
১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:৫৯
ঢাকা: সদ্য পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচারপ্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে ‘অশ্রাব্য’ ভাষায় গালি দেওয়ার ৬ দিন পর ক্ষমা চাইলেন অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে বিএনপি নেতা প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে আপ করা এক ভিডিও বার্তায় দলের নেতাকর্মী, সমর্থক ও দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।
ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমাদের দলীয় একটি সভা হচ্ছিল ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে। সেখানে বক্তব্য দিতে গিয়ে আমি আমার আবেগকে ধরে রাখতে পারিনি। আমি রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত অশালীন কিছু শব্দ ব্যবহার করেছি, সদ্য বহিষ্কৃত একজন প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। যারা আমার বক্তব্যগুলো নিয়মিত দেখেন আমাকে পছন্দ করেন, অনেক মুরব্বিরা রয়েছেন, নতুন প্রজন্মের অনেক ভাইবোনেরা রয়েছেন। আমি সবার কাছে মূলত ক্ষমা প্রার্থী যে, আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি আগামীতে চেষ্টা করব এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে।’
ইশরাক বলেন, ‘আমি নিজেও খুব লজ্জিত ছিলাম, মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আমার পিতৃতুল্য ও অভিভাবক বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আরও সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ছিলেন। তাদের মধ্যে ডাকসুর সাবেক ভিপি ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামসহ দর্শক সারিতেও অনেক মুরব্বি ছিলেন।’
‘আমি এটা কোনো অজুহাত হিসেবে বলতে চাচ্ছি না। জাস্ট প্রেক্ষাপটটা বলতে চাচ্ছি। আমি ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে সেই ব্যক্তির (ডা. মুরাদ হাসান) একটা ভিডিও আমি শুনছিলাম, সেখানে আমাদের কারাবন্দি নেত্রী খালেদা জিয়া, আমরা একটি স্পর্শকাতর অবস্থায় বিএনপির নেতাকর্মীরা রয়েছি। সেই মুহূর্তে এ কথাগুলো আমাদেরকে খুবই আঘাত হানে এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। এটি কোনোভাবে কাম্য নয়। আমরা নতুন প্রজন্ম যারা রাজনীতিতে আসছি, আমরা এটি বারবার বলে আসছি যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার পুনঃপ্রতিষ্ঠা হওয়া উচিত। একে অপরের প্রতি সহনশীল এবং শ্রদ্ধা নিয়ে কথা বলা উচিত’— বলেন ইশরাক হোসেন।
তিনি বলেন, ‘ওই দিন আমার বক্তব্য শেষ করার পর আমি নিজেই বিব্রতবোধ করছিলাম, যে এতগুলো মুরব্বি এবং টিভি ক্যামেরার সামনে আমি এই শব্দ ব্যবহার করেছি। তখন আমি অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করি। আমি বাসায় ফেরার পরে আমার মা আমাকে বলেন, এটি একটি অত্যন্ত গুরুতর ভুল হয়েছে। আমরা ভাইবোনরা যখন বড় হয়েছি, তখন আমার মা আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়েছেন কখনও অশালীন শব্দ না ব্যবহার করার জন্য পরিস্থিতি যাই হোক। পরবর্তীতে আমি আমাদের দলীয় মহাসচিবসহ অন্য নেতাদের সাথে সরাসরি দেখা করে তাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছি এবং আজকে এই ভিডিওর মাধ্যমে দর্শকশ্রোতা যারা রয়েছেন, বিশেষ করে যাদের আমার প্রতি একটা প্রত্যাশা রয়েছে যে একটি সুস্থ ধারার রাজনীতি হয়তবা আমরা সূচনা করতে পারি। তাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আপনারা আমাকে এই একটি ভুলের জন্য ক্ষমা করে দেবেন এবং এটিকে দিয়ে আমার সার্বিক কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন না করার জন্য আমি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। আগামী আপনাদের আশা ভঙ্গ হবে না, সে ধরনের কাজই আমি করে যাব।’
সারাবাংলা/এজেড/একে