Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্তদের মাঝে তরুণদের সংখ্যাই বেশি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৪ ডিসেম্বর ২০২১ ০০:২৪

ঢাকা: দেশে প্রতি চার জনের মধ্যে একজন ব্যক্তি কোনো না কোনো ধরনের মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। চলেছে। আর মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্তদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই হার বেড়েই চলেছে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক রোগে আক্রান্তদের মধ্যে ৯২ শতাংশই নানা কারণে চিকিৎসার বাইরে থেকে যাচ্ছেন।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘স্পেশাল ইনিশিয়েটিভ ফর মেন্টাল হেলথ’ কার্যক্রমের সূচনা ও পরিচিতি অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চাইল্ড অ্যাডোলেসেন্ট অ্যান্ড ফ্যামিলি সাইকিয়াট্রির সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ।

তিনি জানান, বাংলাদেশে গুরুতর মানসিক রোগীদের মাঝে ৪২ শতাংশ কোনো না কোনোভাবে দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক জটিলতায় ভুগে থাকেন। এর মধ্যে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১২ দশমিক ৬ শতাংশ শিশু-কিশোর মানসিক রোগে আক্রান্ত। মানসিক অবসাদে ভুগে দেশে বছরে ১০ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করে।

ডা. হেলাল বলেন, বেকারত্ব, হতাশা, অস্থিরতা, ব্যক্তিজীবনের অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, নানামুখী চাপ, অপ্রাপ্তি, লোভ ও বিচারহীনতা তরুণদের মানসিক রোগীতে পরিণত করছে। দেশে গুরুতর মানসিক রোগীদের মাঝে ৪২ শতাংশই কোনো না কোনো দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক রোগে ভুগছেন। এর মধ্যে ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হাঁপানি, হৃৎপিণ্ডের সমস্যা, ব্রেইন টিউমার, লিভার, কিডনি ও হার্টফেল অন্যতম।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, করোনাকালীন মানসিক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এমনকি করোনার প্রথম বছরেই সারাদেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। তাদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও আশঙ্কাজনক।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের জেলা হাসপাতালগুলোতে সাইকিয়াট্রিস্ট (মনোরোগ বিশেষজ্ঞ) ও কমিউনিটি হাসপাতালে মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সিলর রাখার চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানান।

তিনি বলেন, মানসিক রোগী বা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য আমাদের জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে এখনো ভালো চিকিৎসাব্যবস্থা নেই। আমরা চেষ্টা করছি প্রতিটি জেলা হাসপাতালে একটি মেন্টাল হেলথ কর্নার বা সাইকিয়াট্রিস্ট পদ তৈরি করা যায় কি না। এই বিষয়গুলো আমরা খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখব। তবে এখানে লোকবল সংকটের বিষয়ও আছে। দেখা গেল আমরা পদ তৈরি করেছি, কিন্তু সব ফাঁকা থেকে গেল।

মন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়েও আমাদের ভাবনা আছে। সেখানেও আমরা এনসিডি কর্নার করার কথা ভাবছি। আমরা চিন্তা করব আগামীতে কমিউনিটি ক্লিনিকেও কোনোভাবে মেন্টাল হেলথের ওপর যদি কাউন্সিলের ব্যবস্থা করা যায়।

জাহিদ মালেক বলেন, আত্মহত্যা বা বিবাহবিচ্ছেদের ক্রমবর্ধমান হারের পেছনে মানসিক সমস্যা প্রধানত দায়ী। ব্যক্তির বিষণ্নতার প্রভাব পড়ছে জীবনে, পরিবারে। তছনছ হচ্ছে সংসার। বিবাহবিচ্ছেদ, আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে।

তিনি বলেন,  করোনার আগে আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলাম। তাদের অনুষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে গুরুত্ব দেয়। আমরাও এ বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছি। স্পেশাল ইনিশিয়েটিভ ফর মেন্টাল হেলথ কার্যক্রমের আওতায় বিশ্বের ১২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৬ নম্বরে আছে। এ জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ধন্যবাদ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বার্ন জং রানা, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিনসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

টপ নিউজ মানসিক স্বাস্থ্য

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর