মেম্বারের বিরুদ্ধে দিনমজুরকে হত্যার অভিযোগ
১৫ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:৫৪
বরিশাল: ঝালকাঠিতে জমি নিয়ে পুরনো বিরোধের জেরে চুরির অপবাদ দিয়ে মিরাজ শেখ (৩৫) নামে এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। যুবকের পরিবারের অভিযোগ, কেওড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. নজরুল ইসলাম ও তার লোকজনের মারধরে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মিরাজ শেখ সদর উপজেলার কেওড়া ইউনিয়নের রনমতি গ্রামের সাত্তার শেখের ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গত শনিবার রাতে রনমতি গ্রামে স্থানীয় জলিল মিয়ার মুদি দোকানে তালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটে। পরে দুই ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ও উজ্জ্বল খান ঘটনাস্থল থেকে রাজাপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মিন্টু নামে একজনকে আটক করে মারধর করেন। পরে তাদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে পুলিশ শিপন নামের আরও এক ব্যক্তিকে আটক করে। আটক দুজনই বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
যুবকের পরিবারের ভাষ্য, চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ইউপি সদস্য নজরুল তার লোকজন নিয়ে মিরাজকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে। পরে মিরাজকে পান্নু মেম্বারের বাড়ির পাশের সেতুর কাছে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর এবং কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। স্থানীয় লোকজন মিরাজকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিরাজের মৃত্যু হয়।
মিরাজের মা মাকসুদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তার ছেলেকে হত্যা করেছে। নজরুল ইসলামের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে পূর্বশত্রুতা ছিল। এর জেরে দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মিরাজকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে কেওড়া ইউপির চেয়ারম্যান আবু সাইদ খান বলেন, আমি ঘটনা শুনে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে গিয়ে রোগীর খোঁজ নিয়েছি। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মেম্বারের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে কিছুতেই ছাড় দেওয়া হবে না।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, মিরাজের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে বরিশাল থেকে ঝালকাঠিতে নিয়ে আসা হবে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
সারাবাংলা/এসএসএ