Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাণিজ্য বাড়ানোর আগ্রহ কোবিন্দের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৫ ডিসেম্বর ২০২১ ২৩:৫৬

ঢাকা: বাংলাদেশ সফররত ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।

এদিকে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের ১৪তম প্রেসিডেন্ট তিন দিনের সফরে ঢাকা এসেছেন। তার অংশ হিসেবে বঙ্গভবনে সন্ধ্যায় সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি।

সে সময় ভারতের প্রেসিডেন্ট চলমান ব্যবসায়িক বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ভারতীয়দের সর্বাত্মক সহযোগিতা আগামী দিনগুলোতে অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।

পরে, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সংবাদ মাধ্যমকে বৈঠকের ব্যাপারে জানান।

স্থল-নদী-আকাশ পথে উন্নত যোগাযোগের কথা উল্লেখ করে কোবিন্দ বলেন, এ কারণে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। তিনি দুই দেশের বিনিয়োগকারীদের যোগাযোগ খাতে আরও বিনিয়োগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

ভারতীয় প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে যুদ্ধের নায়ক হিসেবে অভিহিত করে বলেন, বাংলাদেশ মারাত্মক কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে এবং তারাও এতে গর্বিত।

রামনাথ কোবিন্দ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে দুই দেশকে একসঙ্গে কাজ করতে সহায়তা করবে।

তিনি ভারতের জাতীয় দিবসের মার্চপাস্ট ইভেন্টে বাংলাদেশ দল এবং পরবর্তীতে ঢাকায় বাংলাদেশের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ভারতীয় কন্টিনজেন্ট সদস্যদের অংশগ্রহণের প্রশংসা করেন।

বিজ্ঞাপন

কোবিন্দ বলেন, এটি দুই দেশের মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রমাণ।

অন্যদিকে, ভারতের প্রেসিডেন্ট, ফার্স্টলেডি শ্রীমতি সবিতা কোবিন্দ এবং তাদের মেয়ে স্বাতি কোবিন্দ সন্ধ্যা ৬টা ২৫মিনিটে বঙ্গভবনে পৌঁছান। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ভারতীয় প্রেসিডেন্টকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান এবং রাশিদা হামিদও ভারতীয় ফার্স্টলেডিকে আরেকটি ফুলের তোড়া উপহার দেন।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ভারত বাংলাদেশের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত বন্ধু। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সার্বিক সহযোগিতার কথা স্মরণ করে দেশটির সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শুরু হয়েছিল তা বর্তমানে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।

রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বার্তা পাঠিয়ে এবং ভারতের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ব্যক্তিগতভাবে যোগ দিয়ে কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন।

তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, গত এক দশকে নিরাপত্তা, সীমান্ত বন্দোবস্ত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ব্যবসা-বাণিজ্য, অবকাঠামো ও যোগাযোগ খাতে দুই দেশের সম্পর্ক সম্প্রসারিত হয়েছে এবং পরবর্তীতে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার হয়েছে।

বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল। তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন সম্প্রসারণে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করলে বিষয়টি আরও বেগবান হবে।

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী ডা. আব্দুর রাজ্জাক এবং সফররত ভারতের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডা. সুভাষ সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর ভারতীয় রাষ্ট্রপতি উপহার হিসেবে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে ব্যবহৃত রাশিয়ান টি-৫৫ ট্যাঙ্ক এবং মিগ-২১ ভিনটেজ যুদ্ধ বিমানের দুইটি রেপ্লিকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে প্রদান করেন।

রাষ্ট্রপতির অনুষ্ঠানের সাইডলাইনে ভারতের ফার্স্টলেডি শ্রীমতি সবিতা কোবিন্দ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির স্ত্রী রাশিদা খানমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তারা পরস্পরের খোঁজ-খবর নেন এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করেন। ভারতের রাষ্ট্রপতির সৌজন্যে দেওয়া নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারাও নৈশভোজে অংশ নেন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন তারা।

সারাবাংলা/এনআর/একেএম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর