অভিবাসী দিবসে অভিবাসনে মর্যাদা ও নৈতিকতা আনার প্রত্যয়
১৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০০:০৫
আজ শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস। অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করবে বাংলাদেশ। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য— ‘শতবর্ষে জাতির পিতা সুবর্ণে স্বাধীনতা/ অভিবাসনে আনব মর্যাদা ও নৈতিকতা’।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের মূল ও জাতীয় অনুষ্ঠান থাকছে আজ সকাল সাড়ে ১০টায়, রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৯০ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অভিবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও তাদের পরিবারের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক চুক্তি ৪৫/১৫৮ প্রস্তাব আকারে গ্রহণ করে। পরে ২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতি বছর একটি দিন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ব্যাপক হারে অভিবাসন ও বিপুলসংখ্যক অভিবাসীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়কে কেন্দ্র করে পালন করা হবে। সেই থেকে প্রতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালন করে আসছে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো।
অভিবাসী দিবসের বাণীতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ ও ভূ-রাজনৈতিক নানা কারণে অভিবাসন আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। অভিবাসীদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন, কনভেনশন ও সনদগুলোতে বর্ণিত বিধান যথাযথ প্রতিপালন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি প্রত্যাশা করেন— অভিবাসী শ্রমিকরা যেন কোনোভাবে শোষণ, বঞ্চনা ও হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাই সচেষ্ট থাকবেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শ্রম-অভিবাসন বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। আমাদের অভিবাসী কর্মীরা দেশের জন্য আয় করছেন বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স, অবদান রাখছেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে। অন্যদিকে, দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে তারা দেশের সুনাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিচ্ছেন। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন ও জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমাদের অভিবাসী কর্মীরা বিশেষ অবদান রাখছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিবাসী দিবসের বাণীতে বলেন, সরকার অভিবাসন ব্যবস্থায় সুশাসন, গুণগত মানসম্পন্ন বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বহুমুখী কর্মসূচি নিয়েছে। বৈশ্বিক শ্রম বাজারে কোভিড-১৯-এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় অনেক অভিবাসী এরই মধ্যে দেশে প্রত্যাবর্তন করেছেন। আমরা তাদের জন্য স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ এবং পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। এ পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ প্রবাসী কর্মীকে বিশেষ ব্যবস্থায় ‘সুরক্ষা’ অ্যাপের আওতায় এনে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আমরা ৫০ লাখ নতুন বৈদেশিক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। এজন্য উপজেলা পর্যায়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনসহ বিশ্ব চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কোর্স চালু, আন্তর্জাতিক সনদায়নের মতো নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের যুবসমাজকে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দক্ষ হতে হবে এবং বিশ্ব শ্রমবাজারে বাংলাদেশের সুনাম সমুন্নত রাখতে হবে। বাসস।
সারাবাংলা/টিআর