ধর্ষণে শ্যালককে সহযোগিতা, স্ত্রীসহ এএসআই‘র বিরুদ্ধে মামলা
১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:২১ | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:২২
ঢাকা: স্ত্রীসহ তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার এএসআই ওলিউল্লাহ সরকারের (সোহেল) বিরুদ্ধে শ্যালককে ধর্ষণে সহযোগিতার করার অভিযোগে ঢাকার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম তামান্না ফারাহ’র আদালতে মামলাটি দায়ের করেন এক কলেজ ছাত্রী।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন- ওলিউল্লাহ সরকারের স্ত্রী রোকেয়া ওরফে রুনা ও শ্যালক হাফিজুর রহমান মেহেদী।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আদালত পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ২৬ জানুয়ারী প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।
বাদী অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগীর সঙ্গে রোকেয়ার পরিচয় হয়। এ সূত্রে ভুক্তভোগী তাদের সঙ্গে গত বছর ২৫ জানুয়ারী সাবলেট হিসেবে রুম ভাড়া নেন। রোকেয়ার ভাই হাফিজুর রহমান মাঝে মধ্যে বোনের বাসায় আসা যাওয়া করতো। কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে হাফিজুরকে অবিবাহিত বলে পরিচয় করে দেন ওলিউল্লাহ ও রোকেয়া। এরপর ভুক্তভোগী ও রোকেয়ার মধ্যে বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা এক সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন। বন্ধুত্বের সুবাদে হাফিজুর রহমান তাকে কুপ্রস্তাব দেন। তবে ছাত্রী তা প্রত্যাখান করেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে হাফিজুর রহমান তাকে বিভিন্নভাবে প্ররোচনা দিয়ে যৌন মিলনে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন। পরে ভুক্তভোগী অতিষ্ট হয়ে হাফিজুরকে বলেন বিয়ে করতে। হাফিজুর এতে রাজী হয়। তবে বিয়ের বিষয়টি পরিবারকে জানাতে বারণ করে। এতে ভুক্তভোগী প্রথমে রাজী না হলেও পরবর্তীতে আসামির প্রতি ভালোবাসা ও প্রতি দুর্বলতার কারণে রাজী হয়।
বিয়ের রেজিস্ট্রির কথা বলে হাফিজুর ভুক্তভোগীর কাছ থেকে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি নেয়। গত ২১ মার্চ একটি হলফনামা তৈরি করে হাফিজুর দাবি করে ভিকটিমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। ৬ লাখ টাকার একটি কাবিননামাও দেখায়। পরে ভিকটিমসহ তিন আসামি একত্রে বসবাস করতে থাকেন। বিয়ের বিয়ষটি ওলিউল্লাহ ও রোকেয়াকে জানালে তার নিরব ভূমিকা পালন করে।
এজাহারে আরও বলা হয়, হাফিজুর রহমান তার বিশেষ প্রয়োজনে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে গত ১৬ আগস্ট ৫০ হাজার এবং পরবর্তীতে আরও ৫০ হাজার টাকা নেয়। যা সে আত্মসাৎ করে। এরআগে ওলিউল্লাহ ও রোকেয়াও তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেয়। হাফিজুরের কর্মস্থল ছিল ময়মনসিংহ শহরে। এজন্য ভুক্তভোগীকে মাঝে মধ্যে সেখানে রেখে স্ত্রী হিসেবে ব্যবহার করতো। এ অবস্থায় তিনি গর্ভবতী হলে গত ৩০ অক্টোবর আসামিরা জোর করে তাকে ওষুধ সেবন করিয়ে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলে। গত ২ নভেম্বর হাফিজুর রহমান আবার ময়মনসিংহ চলে যায়।
পরবর্তীতে গত ৬ নভেম্বর হাফিজুরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ভুক্তভোগী। তখন হাফিজুর জানায়, তাকে বিয়ে করেনি তিনি। মিথ্যা হলফনামা করে ধর্ষণ করেছে। বউ বাচ্চার কথাও জানায়। পরবর্তীতে গত ১২ নভেম্বর ওলিউল্লাহ ও রোকেয়াও একই কথা জানায়। ভিকটিমকে ওই দিন বাসা থেকে বের করে দেয়। দেড় লাখ আত্মসাৎ করে বিয়ে না করে হাফিজুর তাকে ধর্ষণ করেন এবং এএসআই ওলিউল্লাহ এবং তার স্ত্রী রোকেয়া এতে সহযোগিতা করেছে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
সারাবাংলা/এআই/এনএস